বাঘা যতিনের ভাস্কর্য ভাঙচুর: ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ

Bagha_Jatin_18Dec20.jpg
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা বিপ্লবী বাঘা যতিনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: স্টার

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বাঘা যতিনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় অবহেলার অভিযোগে চার জনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

এরা হলেন, কয়া কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামুল হক চুন্নু, অধ্যক্ষ হারুনুর রশীদ, নৈশপ্রহরী খলিলুর রহমান এবং কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য আনিসুর রহমান।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশের এক সূত্রের দাবি, কুষ্টিয়ায় গত ৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের পর জেলায় যতো ভাস্কর্য আছে, তার নিরাপত্তা বিধানে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা হিসেবে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোসহ গার্ড নিযুক্ত করতে বলা হয়। নির্দেশনার পর বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। কোথাও বসানোর কাজ চলছে। কিন্তু বাঘা যতিনের জন্মস্থানে নির্মিত এ ভাস্কর্য রক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

কয়া কলেজের জমিতে এবং কলেজের মুল প্রবেশ পথের ডান পাশে যতিনের ভাস্কর্যটি অবস্থিত।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীবুল ইসলাম খান জানান, উপজেলায় ইতোমধ্যে একাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

তিনি জানান, যতিন এখানেই বড় হয়েছেন। কলেজের পাশেই যে পুকুর আছে, ওই পুকুরে যতিন গোসল করতেন বলে কথিত আছে।

ইউএনও জানান, কয়া কলেজ যতিনের নামে নামান্তরিত করার প্রস্তাবনা সরকারের নিকট বিবেচনাধীন আছে।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভির আরাফাত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ যতিনের ভাস্কর্য রক্ষায় চরম গাফিলতির পরিচয় দিয়েছে। তারা সরকারের নির্দেশনা স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে।’

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক চার জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান এসপি।

স্থানীয় এক সূত্রে জানা গেছে, যতিনের প্রকৃত মাতুলালয়ের যে জায়গাটি ছিল, সেখানে এখন বসবাস করছেন কয়া কলেজের নৈশপ্রহরী খলিলুর রহমান ও তার পরিবার।

বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় যতিনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করা হয়। আজ শুক্রবার সকালে বিষয়টি ধরা পড়ে। যখন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে তখন কলেজের নৈশপ্রহরী বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানান ওসি মজিবুর রহমান।

ভাস্কর্যের ডান গালে ও নাকের ওপর আঘাত করা হয়েছে। এতে সেখানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

কয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক স্বপন জানান, তিনি একাধিকবার যতিনের ভাস্কর্য রক্ষায় কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানার চেষ্টা করেও কোনো সদুত্তর পাননি।

কুমারখালী উপজেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেছিলেন।

একই বছর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গভর্নর শ্রী তথাগত রায় ওই কলেজ পরিদর্শন করেন এবং পুনরায় ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন। তথাগত রায়ের সম্মানে ভাস্কর্যের পাশেই একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। 

আরও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় এবার বাঘা যতিনের ভাস্কর্য ভাঙচুর

Comments

The Daily Star  | English

Govt accepted demands of JnU protesters: UGC chairman

University Grants Commission Chairman Prof SMA Faiz today said the government has accepted the demands of the protesting Jagannath University students

7m ago