হাতিয়ায় বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবি: আরও ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে বরযাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনায় আরও তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ও আজ শনিবার সকালে মেঘনা নদীর আলাদা স্থান থেকে মরদেহ তিনটি উদ্ধার করা হয়।
যে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তারা হলেন— নলেরচরের আল আমিন গ্রামের নাছির উদ্দিনের স্ত্রী জাকিয়া বেগম (৫৫), পূর্ব আজিমপুর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে নিহা (১) ও আল আমিন বাজার এলকার নাছির উদ্দিনের ছেলে মো. হাসান (৭)। ট্রলারডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত নববধূসহ ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে পাঁচ শিশু। নিখোঁজ শিশুদের মরদেহ উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।
এখনও নিখোঁজ থাকা ৫ শিশু হচ্ছে— হাতিয়ার নলেরচর (চানন্দি) ইউনিয়নের আল আমিন গ্রামের নার্গিস (৪), রুবেল হোসেনের মেয়ে হালিমা (৫), ভয়ারচর গ্রামের ইলিয়াস উদ্দিনের ছেলে আমির হোসেন (২), ভোলার মনপুরার কলাতলী গ্রামের মাইন উদ্দিনের মেয়ে লামিয়া (৩) ও একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে আলিফ উদ্দিন (২)।
হাতিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের ও হাতিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক একরাম উল্যাহ মরদেহ তিনটি উদ্ধারের বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবির পর থেকে নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড হাতিয়ার দুইটি ও ভোলার একটি ডুবুরিদল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ ও নৌ পুলিশ ফাঁড়ি এবং উপজেলা প্রশাসন স্পিডবোটে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উদ্ধার অভিযান চলাকালে আজ সকালে স্থানীয় জেলেদের সহযোগিতায় ভোলার গজারিয়া মেঘনা নদী থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় শিশু নিহা ও পরে মনপুরা থেকে জাকিয়া বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় মেঘনার ট্যাংকির ঘাঁট এলাকা থেকে শিশু হাসানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অপর নিখোঁজদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে ভোলার মনপুরা উপজেলার কলাতলী গ্রামের বেলাল মেস্ত্রীর ছেলে ফরিদ উদ্দিন বিয়ে করতে হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের আল আমিন গ্রামে যায়। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর বিকেল ৩টার দিকে ৭০-৭৫ জন যাত্রী নিয়ে ট্রলারযোগে চানন্দি ঘাট থেকে মনপুরার কলাতলী গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। পথে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মেঘনা নদীর টাংকিরখাল-ঘাসিয়ারচরের মাঝামাঝি এলাকায় তীব্র স্রোতের কবলে পড়ে তাদের ট্রলারটি উল্টে যায়।
সেসময় ট্রলারে থাকা বর ও নববধূসহ সব যাত্রী নদীতে পড়ে যায়। এদের মধ্যে কয়েকজন সাঁতরে কূলে উঠে আসলেও বেশিরভাগ যাত্রী নিখোঁজ হয়। পরে স্থানীয় লোকজন, পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা ট্রলার ও নৌকার মাধ্যমে রাত পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে বরসহ অন্তত ৫৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন:
মেঘনায় বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবি, বর জীবিত ও কনেসহ ৭ মরদেহ উদ্ধার
Comments