‘প্রশ্ন কঠিন’ পরীক্ষা না দিয়ে বিক্ষোভ

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার রাজধানীর কয়েকটি পরীক্ষাকেন্দ্রে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অনেক পরীক্ষার্থীর খাতা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে শিক্ষক ও পরীক্ষা পরিদর্শকদের লাঞ্ছিতের অভিযোগও উঠেছে।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার রাজধানীর কয়েকটি পরীক্ষাকেন্দ্রে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অনেক পরীক্ষার্থীর খাতা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে শিক্ষক ও পরীক্ষা পরিদর্শকদের লাঞ্ছিতের অভিযোগও উঠেছে।

এ বিষয়ে প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো থেকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, সকাল থেকে কয়েকটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে না চেয়ে পরীক্ষার্থীদের একাংশ পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বের হয়ে কেন্দ্রের বাইরে ও ভেতরে বিক্ষোভ করে। হাতে পরীক্ষার প্রশ্ন পাওয়ার পর, তারা একে 'অস্বাভাবিক' ও 'কঠিন' প্রশ্ন বলে পরীক্ষা দিতে চায়নি এবং অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে বাঁধা দেয়। তারা পরীক্ষার্থীদের খাতা টেনে ছিঁড়ে ফেলে। কেন্দ্রের শিক্ষকদের ও পরীক্ষা পরিদর্শকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। 

এর মধ্যে, মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ও সূত্রাপুর থানাধীন মহানগর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে কিছু পরীক্ষার্থী সকালে পরীক্ষা দিতে অনীহা প্রকাশ করে। পরে, তারা পরীক্ষা দিতে আগ্রহী পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে বাঁধা দেয় এবং কেন্দ্রের বাইরে এসে বিক্ষোভের চেষ্টা করে।

মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের এক পরীক্ষার্থী বলেন, 'আমরা সকাল ৯টায় পরীক্ষা দিতে আসি। এক ঘণ্টা পর কিছু পরীক্ষার্থী বিক্ষোভ করতে শুরু করে। তারা পরীক্ষার হল থেকে আমাদের বের হয়ে যেতে বলে।'

'তারা আমাদের উত্তরপত্র কেড়ে নিয়ে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়,' তিনি বলেন।

শিহাব কাউসার নামের অপর এক পরীক্ষার্থী বলেন, 'আমি কলেজের পঞ্চম তলায় পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। নিচের সেসব দৃশ্য দেখে পরীক্ষকেরা ওই পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা নিতে চাননি। একটায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, তারা সাড়ে ১০টার দিকে আমাদের উত্তরপত্র জমা দিতে বলেন।'

'আমরা পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়েও, পরীক্ষা দিতে পারিনি। আমরা আবার পরীক্ষার দাবি করছি,' বলেন তিনি।

মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক নিউটন মৃধা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সকালে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে পরীক্ষার্থীদের একাংশ কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষা না দেওয়ার জন্য বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে।

আর, পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরে থাকা কিছু পরীক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়ে খাতা ছিঁড়ে ফেলে এবং অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে বাঁধা দেয়। তাদের খাতা কেড়ে নিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

এ দিকে, সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রহমান জানান, সকালে কিছু পরীক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়ে বের হয়ে যায়। বাইরে অপেক্ষমাণ আত্মীয়স্বজন এবং কিছু বহিরাগতদের সহযোগিতায় তারা বিক্ষোভ শুরু করে।

পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয় এবং পরে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় বলে জানান তিনি।

সূত্র জানায়, অ্যাডভোকেটশিপ প্রার্থীদের এই লিখিত পরীক্ষা গত ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, করোনা পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে আজ ১৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এ বছর রাজধানীর নয়টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৩ হাজার প্রার্থীর জন্য এই লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করে বার কাউন্সিল।

এর আগে, প্রার্থীদের একাংশ লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে অ্যাডভোকেটশিপ এনরোলমেন্টের দাবিতে আন্দোলন করছিল।

আরও পড়ুন-

বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা ১৯ ডিসেম্বর

Comments

The Daily Star  | English

Former lawmakers Asaduzzaman Noor, Mahbub Ali arrested

DB arrested Asaduzzaman Noor at 11:00pm from Nawratan colony on Bailey Road, while, Mahbub Ali was arrested from Segunbagicha area

7h ago