সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট, বেড়েছে জনভোগান্তি
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/sylhet_strike_2.jpg?itok=oqscwXNG×tamp=1608708714)
সিলেটের পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের ডাকা ৭২ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে জনভোগান্তি বেড়েছে।
সিলেট বিভাগে গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে আগামী শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার এই ধর্মঘট ডেকেছে বৃহত্তর সিলেটের পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিক ঐক্য।
গতকাল ভোর থেকেই সিলেট নগরী, অন্যান্য জেলা শহর, উপজেলা শহরে যানবাহন প্রবেশ ও বের করতে বাধা দিচ্ছেন ধর্মঘটকারীরা।
আজ বুধবার তাদের এ বাধা অব্যাহত থাকায় সিলেট নগরীতে গণপরিবহন ছাড়াও প্রবেশ করেনি কোনো ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি। এর প্রভাব পড়ছে কাঁচাবাজারে।
সিলেটের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী সবিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘খোলা ট্রাকে পণ্য পরিবহনে সমস্যা হতে পারে ভেবে কাভার্ডট্রাকে করে সবজি আনলেও ট্রাকটি হুমায়ুন রশীদ চত্বরে আটকে দেয় ধর্মঘটকারীরা। পরে ঠেলাগাড়ি ভাড়া করে সেখান থেকে পণ্য নিয়ে পাইকারি বাজারে আসতে হয়েছে।’
‘ধর্মঘটের কারণে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়ে গিয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, ‘এর প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই দামের ওপর পড়বে।’
নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে গতকাল বিকেল থেকেই বাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন পণ্যের দাম।
আজ সকালে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। আর কিছু পাওয়া গেলেও দাম বেড়েছে কয়েকগুণ।
বৃহত্তর সিলেটের পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিক ঐক্য’র আহবায়ক আব্দুল জলিল ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক দুর্ভোগে রয়েছেন। আমাদেরকে তাদের বিষয়টাও তো ভাবতে হবে। তাই আমাদের দাবি না মানলে শুক্রবার পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।’
‘পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে’ বলেও যোগ করেন তিনি।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় প্রাকৃতিকভাবে পাথর পাওয়া গেলেও তা যন্ত্রের সাহায্যে তুলতে অবৈধ উপায় বেছে নেন ব্যবসায়ীরা।
পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে চলতি বছরের শুরু থেকে স্থানীয় প্রশাসন পাথর উত্তোলন সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছে। এ বছর সিলেটের তালিকাভুক্ত পাথর কোয়ারিগুলো ইজারা দেয়নি খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো।
সার্বিক বিষয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘পাথর উত্তোলন ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলন করলে তা যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু এর সঙ্গে গণপরিবহন শ্রমিকদের কোনো সম্পর্ক নেই। মূলত গণপরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে ধর্মঘটের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে তারা তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন— যা অনৈতিক।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় পাথর উত্তোলন বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের উচ্চপর্যায়ে নেওয়া হয়েছে। এখানে স্থানীয় প্রশাসন তা চালুর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বিষয়টি তাদেরকে বুঝিয়ে বলার পরও তারা ধর্মঘট পালন করছেন। আমরা তবুও চেষ্টা করছি তাদেরকে বুঝিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করাতে।’
আরও পড়ুন:
পাথর উত্তোলনের অনুমোদন দাবিতে সিলেটে ‘পরিবহন শ্রমিকদের’ ধর্মঘট
Comments