এক টন পণ্য ২৩ টন দেখিয়ে রপ্তানি চেষ্টা

বাংলা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের দুই বছরের চালান খতিয়ে দেখছে কাস্টমস
মালয়েশিয়ায় রপ্তানির জন্য কনটেইনারের সামনের অংশে খাদ্যপণ্যের কয়েকটি বাক্স থাকলেও প্রায় পুরোটাই ফাঁকা পান চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কর্মকর্তারা। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় রপ্তানির জন্য দুটি কনটেইনারে ২৩ টন খাদ্যপণ্য থাকার কথা থাকলেও পাওয়া গেছে এক টনেরও কম। আজ বুধবার বাংলা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের দুটি কনটেইনারে পণ্যের হিসেবে হেরফের দেখতে পান বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, দেশে থেকে খাদ্যপণ্য রপ্তানির নামে কালো টাকা সাদা করার পাশাপাশি সরকারের কাছ থেকে রপ্তানি পণ্যের বিপরীতে নগদ প্রণোদনা নিতেই এটি করা হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনায় বাংলা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে গত দুই বছরে খালাস নেয়া ৪৮টি চালানে ২৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকার রপ্তানি তথ্য সংগ্রহ করে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আটক হওয়া চালান দুটি জাহাজীকরণের জন্য গতকাল মঙ্গলবার রাতে বেসরকারি ডিপো ইস্টার্ন লজিস্টিক ইয়ার্ড থেকে বন্দরে জেটিতে নেয়া হচ্ছিল। ঘোষণার চেয়ে অনেক কম পরিমাণ পণ্য থাকা পরও তা ওজন স্কেল ও সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তারা ঠিক আছে মর্মে প্রত্যয়ন করেন।

কাস্টমসের নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আটক চালান দুটি মালয়েশিয়ার সাকসেসু ফেলিস ট্রেডিং (এম) এর কাছে রপ্তানির জন্য গত ২১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ইস্টার্ন লজিস্টিক ডিপোতে আনেন আমদানিকারকের পক্ষে আর ইসলাম এজেন্সি। ঘোষণা অনুযায়ী পণ্য ও ওজন সঠিক আছে জানিয়ে প্রত্যয়ন করেন দুই শুল্ক কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কাস্টমসে অর্থপাচার মামলার পাশাপাশি থানায় ফৌজদারি মামলা করারও প্রক্রিয়া চলছে। চালানটি মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে জাহাজীকরণের সাথে রপ্তানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট, কাস্টমস কর্মকর্তা, শিপিং এজেন্ট এবং ডিপো কর্মকর্তারা জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি বলেন, ঘোষণা অনুযায়ী চালানটিতে মুড়ি, বিস্কুট, মসলাসহ ৫৪৫ বাক্স বিভিন্ন খাদ্য পণ্য থাকার কথা ছিল। কাস্টমস কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিতে কনটেইনার দুটির ভেতর ফাঁকা হলেও কনটেইনারের সামনে কিছু পণ্য রাখা ছিল। প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার ডলারের এ চালানটি খালাস করতে পারলে প্রতিষ্ঠানটি ১০ শতাংশ হারে প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকার প্রণোদনা পেত। এছাড়াও রপ্তানি মূল্যের সমপরিমাণ কালো টাকা সাদা করার সুযোগ পেত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।

‘আমরা আশঙ্কা করছি প্রতিষ্ঠানটি আগেও একইভাবে রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচারের পাশাপাশি সরকার থেকে নগদ প্রণোদনা নিয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠানটির গত দুই বছরে রপ্তানির যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে,’ বলেন তিনি।

এ বিষয়ে সিএন্ডএফ এজেন্ট- আর ইসলাম এজেন্সির সত্ত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন ধরেননি।

Comments

The Daily Star  | English
BDR protest Kakrail today

Cops use water cannons to disperse protesting dismissed BDR members in Kakrail

Police barred them when they were marching towards the chief adviser’s residence, Jamuna

1h ago