বেরোবিতে পতাকা বিকৃতির সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) মহান বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা বিকৃত করে উপস্থাপন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে রংপুর জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি।
ওই ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশসহ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে কমিটি। ওই প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর কাছে পাঠানো হয়েছে।
আজ বুধবার রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, জাতীয় পতাকা বিকৃতির ঘটনায় রংপুর জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে জাতীয় পতাকা বিকৃতির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ডিসি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। সেকারণে আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পাঠানো হয়েছে।’
এর আগে, ওই ঘটনার তদন্তে গত বৃহস্পতিবার রংপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানী। অন্য সদস্যরা হলেন, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার জিন্নাহ আল মামুন।
পতাকা বিকৃতির ঘটনার এক সপ্তাহ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকাস্থ লিঁয়াজু অফিসে সিন্ডিকেটের ৭৩তম বিশেষ সভায় তিন সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল ইসলামকে আহ্বায়ক, প্রক্টর আতিউর রহমানকে সদস্য সচিব এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য সুচিতা সুচিত্রা শারমিনকে সদস্য করা হয়েছে। তবে, এই কমিটি কবে নাগাদ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো সময় বেধে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিযোগ, পতাকা অবমাননার ঘটনায় অভিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সভাপতিত্বে এবং আরেক অভিযুক্ত শিক্ষক আর এম হাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে সুপারিশে সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মতামতের ভিত্তিতে গঠিত এ তদন্ত কমিটি মূলত তাদেরকে দায়মুক্তি দিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে পতাকা বিকৃতির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হক বলেন, ‘পতাকা অবমাননার ঘটনায় সাতদিন পর তদন্ত কমিটি গঠন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতারই বহিঃপ্রকাশ। উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কয়েকজন পতাকা অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত।’
প্রসঙ্গত, মহান বিজয় দিবসে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারকে বিকৃত পতাকা নিয়ে ছবি তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় ৯ শিক্ষকসহ উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন শিক্ষক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজহাট থানায় দুটি এজাহার দায়ের করেন।
আরও পড়ুন:
Comments