‘বিজেপির পরাজয় প্রমাণ দিচ্ছে কাশ্মীরের জনগণ ৩৭০ ধারা ভোলেনি’
ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের স্থানীয় নির্বাচনের ফলাফল বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের মুখোশ ‘উন্মোচন’ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) নেতা মেহবুবা মুফতি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’কে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনের ফল প্রমাণ করেছে যে, মানুষ সংবিধানের ৩৭০ ধারা বা কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের কথা ভুলে যায়নি।’
গত বছরের আগস্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার পর এই প্রথম সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরে ডিস্ট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (ডিডিসি) নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছে কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলোর ‘গুপকার জোট’।
এ বছর ডিডিসি নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে মেহবুবা মুফতির পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি), সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহর ন্যাশনাল কনফারেন্সসহ কাশ্মীরের সাতটি রাজনৈতিক দল জোটবদ্ধ হয়ে ‘গুপকার জোট’ গঠন করে।
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ’র নেতৃত্বাধীন এই জোট জম্মু-কাশ্মীরের ২০টির মধ্যে ১৩টি জেলায় জয় পেয়েছে।
নির্বাচনে যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রাখা হতো তাহলে বিজেপি’র অবস্থা আরও শোচনীয় হতো বলে মনে করছেন মেহবুবা মুফতি।
নির্বাচনে জয় প্রসঙ্গে এই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘জনগণ জোটের পক্ষে ভোট দিয়েছে। দিল্লির জন্য এটা স্পষ্ট বার্তা যে, মানুষ ভুলে যায়নি ৩৭০ ধারা এখনও আমাদের অন্তরে গেঁথে আছে। আমাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমরা লড়াই করবো।’
এছাড়াও, ৩৭০ ধারা পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মেহবুবা মুফতি।
গুপকার জোটের হয়ে ভবিষ্যতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা ও ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে জোটসঙ্গীদের সঙ্গে বিরোধের আশঙ্কা সম্পর্কে মেহবুবা মুফতি বলেছেন, ‘পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রশ্ন উঠলেও জম্মু-কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান ও ৩৭০ ধারা পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত আমি নির্বাচনে লড়বো না।’
প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
জোট-সঙ্গীদের সম্পর্কে মেহবুবা বলেছেন, ‘আমরা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলাম। তবে জম্মু-কাশ্মীরের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সবাই এক হয়েছি। আমরা দিনশেষে কাশ্মীরী। আমরা কেবল নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলছি না, যা হারিয়েছে তা পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছি।’
পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময় আসলে আমরা একত্রে বসবো এবং আলোচনা করবো। তবে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবো না।’
সম্প্রতি, জম্মু-কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ২০ জেলায় ১৪টি করে মোট ২৮০ আসনে ভোটগ্রহণ হয়। পঁচিশ দিন ধরে আট দফায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
৩৭০ ধারা বাতিলের প্রতিক্রিয়া, জয়ের পথে ফারুক আবদুল্লাহর জোট
Comments