‘দুর্নীতির অভিযোগ সঠিক না, নির্বাচনে ভোট পড়ে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ’

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ, দুর্নীতিসহ গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগের তদন্ত দাবি করে রাষ্ট্রপতির কাছে ৪২ জন নাগরিকের চিঠির ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা।
সিইসি কে এম নূরুল হুদা। স্টার ফাইল ছবি

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ, দুর্নীতিসহ গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগের তদন্ত দাবি করে রাষ্ট্রপতির কাছে ৪২ জন নাগরিকের চিঠির ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা।

গত ১৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো অভিযোগ সম্বলিত চিঠির উত্তরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে যেসব আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছে তা বস্তুনিষ্ঠ নয়। নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা উঠে যাওয়ার অভিযোগও ভিত্তিহীন। নির্বাচনে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোট পড়ছে।

ঢাকায় নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত আজকের সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সিইসি। তবে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেওয়া হয়নি। 

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না।

নির্বাচনী প্রশিক্ষণের জন্য বক্তৃতা না দিয়ে সম্মানী হিসেবে দুই কোটি টাকার আর্থিক অসদাচরণ, নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চার কোটি আট লাখ টাকার অনিয়ম, নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিন জন কমিশনারের তিনটি গাড়ি ব্যবহারজনিত আর্থিক অসদাচরণ, ইভিএম কেনা ও ব্যবহারে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়মের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সঠিক নয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৬-৭ লাখ জনবলের প্রশিক্ষণে ১৫ জন বিশেষ বক্তার সম্মানী ভাতা বাবদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক কোটি চার লাখ টাকা এবং পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য ৪৭ লাখ ৭০ লাখ টাকার সংস্থান করা হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ জন বিশেষ বক্তা প্রশিক্ষণ দিয়ে সম্মানী নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ কোর্সের উপদেষ্টা হিসেবে ইসি সচিব সম্মানী নিয়েছেন। অব্যবহৃত অর্থ ট্রেজারিতে ফেরত দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, যে অর্থ ব্যয় হয়েছে তার সমস্ত প্রক্রিয়া দালিলিক প্রমাণভিত্তিক, এক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।

সিইসির দাবি, নির্বাচনের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ১৫ জন বিশেষ বক্তার জন্য কর্মপরিকল্পনায় দুই কোটি টাকার বরাদ্দই ছিল না। সেক্ষেত্রে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

লিখিত বক্তব্যের শুরুতে সিইসি বলেন, সম্প্রতি দেশের ৪২ নাগরিক ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন বলে তারা (কমিশনার) শুনেছেন। এ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় কমিশনের বক্তব্য স্পষ্ট করা প্রয়োজন। সিইসি বলেন, কমিশনারগণ গত তিন বছরে প্রাধিকারভুক্ত গাড়িই পায়নি। যে গাড়ি ব্যবহার করছে, সেটি কমিশন কার্যালয়ে ব্যবহৃত হতো। নির্বাচন কমিশনারদের গাড়ি নিয়ে অনিয়মের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা বস্তুনিষ্ঠ নয়।

কর্মচারী নিয়োগপ্রক্রিয়ায় এবং ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারে কোনো দুর্নীতি হয়নি বলেও দাবি করে সিইসি বলেন, ইভিএম ক্রয়ের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কোনো লেনদেন করেনি। ইভিএম কেনার পুরো প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে। ভারতে ব্যবহৃত ইভিএমের তুলনায় বাংলাদেশের ইভিএম প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত হওয়ার কথা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, দুই দেশের ইভিএমের দামের তুলনা সমিচিন নয়।

একইভাবে বিভিন্ন নির্বাচনে অসদাচরণ ও অনিয়ম নিয়ে বিশিষ্ট নাগরিকদের আনা অভিযোগও নাকচ করে দিয়েছে কমিশন। এ ব্যাপারে সিইসি বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি কূটনীতিকেরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোও কোনো অভিযোগ করেনি। স্থানীয় সংসদ নির্বাচনে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন।

সিইসি দাবি করেন, তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোট পড়ছে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ। প্রতি আসনে বা পদে প্রার্থী দুই থেকে আট জন। তাই নির্বাচনের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়েছে, এ কথা ভিত্তিহীন।

আরও পড়ুন:

ইসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ: 'সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল' গঠনের আহ্বান ৪২ নাগরিকের

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago