জুয়েল-রায়হান নৈপুণ্যে মোহামেডানকে হারাল আবাহনী
এক সময় ঢাকা মোহামেডান ও আবাহনীর লড়াই মানেই ছিল ভিন্ন রকম উত্তেজনা। কালের বিবর্তনে সেই উত্তেজনা আর নেই। আছে কেবল ঐতিহ্যের লড়াই। আর তাতে সহজেই জয় পেয়েছে আবাহনী। তাতে ওয়াল্টন ফেডারেশন কাপে শুভসূচনা করেছে ধানমন্ডি পাড়ার দলটি।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ঢাকা মোহামেডানকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। দলের হয়ে দুটি গোল করেছেন জুয়েল রানা। অপর গোলটি পেয়েছেন মাসিহ সিয়াঘানি। দারুণ দুটি লম্বা থ্রো করে দুটি গোলের কারিগর ছিলেন রায়হান হাসান।
ম্যাচের শুরুতে থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে আবাহনী। মোহামেডান শিবিরে বেশ চাপ সৃষ্টি করে তারা। তবে গোল করার প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল মোহামেডানই। দশম মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়েও জোরালো শট নিতে পারেননি সুলেমানি দিবাতে। আট মিনিট পর আরও একটি সুযোগ ছিল তার। কিন্তু এবার লক্ষ্যেই শট নিতে পারেননি তিনি।
২১তম মিনিটে দারুণ সুযোগ ছিল আবাহনীরও। রায়হানের লম্বা থ্রো থেকে লাফিয়ে হেড নিয়েছিলেন যে হেড নেন তার সতীর্থ তা লক্ষ্যে থাকেনি। পাঁচ মিনিট পর রায়হানের আরও একটি লম্বা থ্রো থেকে ভালো হেড নিয়েছিলেন বেলফোর্ট কার্ভেন ফিলস। তবে তার হেড বারপোস্টের সামান্য উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
২৭তম মিনিটে গোল করার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল মোহামেডান। সুলেমানের ক্রস থেকে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন শ্যামল ব্যাপারী। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
৩১তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগ ছিল আবাহনীর। বাঁ প্রান্ত থেকে এর ক্রস থেকে আলতো টোকা দিয়েছিলেন নাবিব নেওয়াজ জীবন। তবে প্রস্তুত ছিলেন মোহামেডান গোলরক্ষক। সে যাত্রায় কোনও বিপদ হয়নি।
তবে ৪১তম মিনিটে আবাহনীকে আর আটকাতে পারেনি মোহামেডান। রায়হানের লম্বা থ্রো থেকে মাসিহ সিয়াঘানির হেড প্রায় ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন মোহামেডান গোলরক্ষক। তবে বারপোস্টে লেগে বল জালে জড়ালে এগিয়ে যায় নীল-হলুদ জার্সিধারীরা। তবে পরের মিনিটে গোল শোধ করতে পারতো মোহামেডান। সেট পিস থেকে কামরুল ইসলামের হেড প্রায় বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে সমতায় ফেরা হয়নি সাদাকালোদের।
উল্টো প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট আগে আরও একটি গোল হজম করে মোহামেডান। এবার গোল পান জুয়েল রানা। অবশ্য এ গোলের মূল কৃতিত্ব আফগান তারকা মাসিহর। ডান প্রান্ত থেকে জীবনের ক্রস থেকে অসাধারণ এক ব্যাকভলি নিয়েছিলেন তিনি। গোলরক্ষকের সামনে থেকে কেবল মাথা ছুঁইয়ে দিক বদলে দেন জুয়েল। তাতেই বল জালে জড়ায়।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে ভালো সুযোগ পেয়েছিল মোহামেডান। সতীর্থের বাড়ানো বলে ডি-বক্সে জটলায় বল পেয়েছিলেন সুলেমানে। কিন্তু লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি তিনি। উল্টো পরের মিনিটে রায়হানের আরও একটি লম্বা থ্রো থেকে গোল পায় আবাহনী। গোলমুখে জটলা সৃষ্টি হলে ফাঁকায় বল পেয়ে আলতো টোকায় বল জালে পাঠান এ জুয়েল।
৫৭তম মিনিটে সাহেদ মিয়ার দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে থামান আবাহনী গোলরক্ষক শহিদুল আলম। পাঁচ মিনিট পর তো গোল শোধের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে মোহামেডান। ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও বাইরে মারেন সোহানুর রহমান। ৭৮তম মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটি মিস করেন মোহামেডানের আমিনুর রহমান সজিব। ফাঁকায় পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি তিনি। পাঁচ মিনিট পর আমির হাকিম বাপ্পির দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান আবাহনী গোলরক্ষক।
এরপরও গোল শোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল মোহামেডান। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়েছে দলটি। ফলে বড় হার নিয়ে ফেডারেশন কাপ শুরু করতে হয় দলটিকে।
Comments