গাজীপুরে বেতন পরিশোধের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিলো শ্রমিকরা

গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও ভাতার দাবিতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়েছে।
এর আগে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের লক্ষ্মীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে গাজীপুর শহর সংযোগ সড়ক অবরোধ করে। তারা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের অবশিষ্ট ৩৫ ভাগ করে ৭০ ভাগ বকেয়া বেতন ও নভেম্বর মাসের পূর্ণ বেতন, ওভারটাইম ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ছুটির ভাতাসহ পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে এই অবরোধ করে। ফলে, শুক্রবার দিনভর সড়ক অবরোধ অব্যাহত থাকায় যাত্রী ও পথচারীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সমীর চন্দ্র সূত্রধর জানান, শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলে। অনেক চেষ্টার পরও তারা অবরোধ তুলে নেয়নি। শ্রমিকরা বেতন পরিশোধের ব্যাপারে কারখানার মালিকের উপস্থিতি ও তাদের সঙ্গে আলোচনার দাবি জানায়। এসময় মালিক পক্ষের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার উদ্যোগ নেয় পুলিশ। মালিকপক্ষের সঙ্গে সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্রমিক প্রতিনিধিদের কয়েক দফা আলোচনা হয়।
আলোচনা শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নভেম্বর মাসের ৫০ শতাংশ বেতন আগামী ২৮ ডিসেম্বর সোমবার ও বাকি ৫০ শতাংশ ৭ জানুয়ারি, ডিসেম্বর মাসের বেতন ২৭ জানুয়ারি, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের ৩৫ শতাংশ করে ৭০ শতাংশ বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনাদি জানুয়ারি হতে এপ্রিল মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে পরিশোধের ঘোষণা দেন। এছাড়াও, শনিবার থেকে কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণার পর সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে শ্রমিকরা সড়কের অবরোধ তুলে নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। এরপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং সড়কে পুনরায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, একই দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটা থেকে শ্রমিকরা একইস্থানে রাত নয়টা পর্যন্ত থেমে থেমে বিক্ষোভ করে।
জিএমপির সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এ সময় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা বাধা দেয়। এতে শ্রমিকেরা আরও উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে জিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার রেজোয়ান আহমেদ, গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াসিউজ্জামান ও শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর সমীর চন্দ্র সূত্রধরসহ ৫-৭জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ও লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে শুক্রবার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে বেআইনি সরকারি রাস্তা অবরোধ করে সরকারি কাজে বাঁধা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে, এসব বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমের কথা বলতে রাজি হয়নি।
Comments