চলে গেলেন আবদুল কাদের

অভিনেতা আবদুল কাদের মারা গেছেন। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
অভিনেতা আব্দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেতা আবদুল কাদের মারা গেছেন। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন আবদুল কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি।

এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর আবদুল কাদেরকে চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ের ক্রিশ্চিয়ান হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১৫ ডিসেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তার ক্যানসার হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে।

শারীরিক দুর্বলতার কারণে কেমোথেরাপি না দিয়েই গত ২০ ডিসেম্বর আবদুল কাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় তার পরিবার। দেশে এনে তাকে ভর্তি করানো হয় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তার। সেখানে শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো থাকলেও গতকাল হঠাৎ অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সবশেষ সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেলেন।

মৃত্যুকালে আবদুল কাদেরের বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী খায়রুন্নেসা কাদের এবং এক ছেলে ও মেয়েকে রেখে গেছেন।

অভিনেতা আবদুল কাদের ১৯৫১ সালে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আবদুল জলিল ও আনোয়ারা খাতুনের সন্তান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন তিনি। কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতা দিয়ে। তারপর ১৯৭৯ সাল থেকে ‘বাটা’ কোম্পানিতে চাকরি করেন। সেখানে ছিলেন ৩৫ বছর।

হুমায়ূন আহমেদ রচিত ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক পরিচিতি পান আবদুল কাদের। জনপ্রিয় এই অভিনেতা একইসঙ্গে টিভি নাটক, বিজ্ঞাপনচিত্র ও সিনেমায় অভিনয় করেছেন। দেশের অন্যতম পরিচিত মঞ্চ নাটকের দল ‘থিয়েটার’র সদস্য হয়ে দলটির ৩০টি প্রযোজনায় অভিনয় করেছেন তিনি। যেগুলোর মধ্যে পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়; তোমরাই; স্পর্ধা; মেরাজ ফকিরের মা;  দুই বোন এবং এখনো ক্রীতদাস উল্লেখযোগ্য।

১৯৭২ সাল থেকে টেলিভিশন ও ১৯৭৩ সাল থেকে রেডিও নাটকে অভিনয় শুরু করেছিলেন তিনি। টেলিভিশনে তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘এসো গল্পের দেশে’। তিনি দুই হাজারের বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক— কোথাও কেউ নেই; মাটির কোলে; নক্ষত্রের রাত; শীর্ষবিন্দু; সবুজ সাথী; তিন টেক্কা; যুবরাজ; আগুন লাগা সন্ধ্যা; প্যাকেজ সংবাদ; সবুজ ছায়া; কুসুম কুসুম ভালোবাসা; নীতু তোমাকে ভালোবাসি; আমাদের ছোট নদী; দুলাভাই; অজ্ঞান পার্টি; মোবারকের ঈদ; বহুরূপী; এই মেকআপ; ঢুলিবাড়ি; সাত গোয়েন্দা; এক জনমে; জল পড়ে পাতা নড়ে এবং খান বাহাদুরের তিন ছেলে ইত্যাদি। ‘রং নাম্বার’ নামের একটি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন আবদুল কাদের।

আবদুল কাদের বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাট্যশিল্পী ও নাট্যকারদের একমাত্র সংগঠন টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদের (টেনাশিনাস) সহ-সভাপতি ছিলেন।

আরও পড়ুন:

আবদুল কাদের আইসিইউতে

‘অভিনেতা আব্দুল কাদের করোনা আক্রান্ত নন, শারীরিক অবস্থা একটু ভালো’

চেন্নাই থেকে ফিরে ঢাকার হাসপাতালে আবদুল কাদের

ক্যান্সারের পর করোনায় আক্রান্ত আবদুল কাদেরের ইচ্ছে...

অভিনেতা আব্দুল কাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

10h ago