অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ‘অগোছালো’ মনে হচ্ছে শচীনের
স্টিভ ওয়াহর কিংবা রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া দল টেস্টেও নামত আগ্রাসী মেজাজে। থিতু ব্যাটিং অর্ডার, পরিষ্কার চিন্তা, ইতিবাচক অ্যাপ্রোচ নিয়ে দাপট দেখাত তারা। আগে ব্যাট করতে গেলে প্রথম দিনেই তিনশোর বেশি রান ছিল হরহামেশা ব্যাপার। সেই দলগুলোর সঙ্গে বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলের ব্যাটিংয়ে অনেক তফাৎ দেখছেন ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার। তার মতে এবারের দলটি বেশ অগোছালো।
অ্যাডিলেডে জিতলেও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ছিল বেশ দুর্বল। মেলবোর্নে তো ব্যাটিং ব্যর্থতায় তারা হেরেছে বড় ব্যবধানে। দুই টেস্ট মিলিয়ে দলের সর্বোচ্চ ইনিংস ২০০।
মেলবোর্নে সর্বশেষ টেস্টে কোন ইনিংসেই ফিফটি করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার কোন ব্যাটসম্যান। সবশেষে এমনটা দেখা গিয়েছিল সেই ১৯৮৮ সালে। তখনকার প্রতাপশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
ম্যাথু হেইডেন, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, স্টিভ ওয়াহ, রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্টদের দাপটের যুগে তাদের সঙ্গে শক্ত লড়াইয়ের অনেক স্মৃতি জমা শচীনের।
মাস্টার ব্যাটসম্যানের তাই মনে হচ্ছে আগের সময়ের চেয়ে বর্তমান দলটার অনেক তফাৎ, পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাতকারে জানালেন নিজের পর্যবেক্ষণ, ‘অস্ট্রেলিয়ার সেইসময়ের ব্যাটিং লাইনআপ দেখেছি আর এই দলটার ব্যাটিং লাইন দেখছি। আগেকার দলগুলো অনেক বেশি পরিকল্পিত, গোছানো ছিল। ওরা একটা তাড়নাবোধ নিয়ে ব্যাট করে যেত। এই দলটার ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছে এখনো গুছিয়ে উঠতে পারেনি।’
ওপেনিংয়ে জো বার্নস, ম্যাথু ওয়েডের কাছ থেকে প্রত্যাশা মেটেনি অজিদের। বার্নস বাদ পড়েছেন। চোট কাটিয়ে ডেভিড ওয়ার্নারের ফেরা হয়ত কিছুটা অস্বস্তির। তবে মিডল অর্ডারে ট্রেভিস হেড কতটা কার্যকর সেই প্রশ্ন উঠছে। ওয়েড ওপেনিংয়ে নাকি মিডল অর্ডারে ভালো সেই প্রশ্ন তুলেছেন শেন ওয়ার্ন। শচীনের মনে হচ্ছে সিরিজের মাঝে নিজের জায়গা নিয়ে এমন অনিশ্চয়তা প্রভাব ফেলছে তাদের, ‘অস্ট্রেলিয়ার এই দলে কিছু ব্যাটসম্যান নিজেদের জায়গা নিয়ে চিন্তায় আছে, তারা ফর্মে নেই, তাদের ভেতর অনিশ্চয়তা কাজ করছে। আগের দলগুলতে সবার ব্যাটিং অর্ডার নির্ধারিত ছিল। কে কোথায় ব্যাট করবে তা নিয়ে ভাবনা ছিল না।’
তবে একজন রান পেলে অনেক খামতিই পড়ে যেত আড়াল। দলের সেরা তারকা স্টিভ স্মিথ আছেন বাজে ফর্মে। চার ইনিংস মিলিয়ে করতে পেরেছেন মাত্র ১০ রান। দুবার তাকে আউট করেছেন অফ স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিন। শচীন ধরিয়ে দিয়েছেন অশ্বিনের কোন ফাঁদে কাবু হয়েছেন এই তারকা, ‘স্মিথকে অশ্বিন দুবার আউট করেছে। প্রথম টেস্টে একটা আর্ম বলে কিংবা বলা যায় একটা সোজা বলে উইকেট পড়েছে। এই বলটা অশ্বিন একটু অন্যভাবে ছুঁড়ে। আঙুল বলের উপরে রাখে না।’
‘দ্বিতীয় টেস্টে আবার অশ্বিন বলের উপরে আঙুল রেখেছিল। যে কারণে বাউন্স পেয়েছিল আবার বল ঘুরেওছিল। স্বাভাবিকভাবে স্মিথ ফ্লিক করে। লেগ স্লিপে দারুণ জায়গায় ফিল্ডার রাখা হয়েছিল। স্মিথকে ফেরানো দারুণ পরিকল্পনার ফসল। তবে দুজনেই দুর্দান্ত ক্রিকেটার। স্মিথের হয়ত খারাপ দিন গেছে, অশ্বিনের ভালো। ’
Comments