উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে আবাহনীকে হারিয়ে ফাইনালে বসুন্ধরা

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের শেষ মুহূর্ত। বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা ঢাকা আবাহনী জালে জড়াল বল। কিন্তু লাইন্সম্যান তুললেন অফসাইডের পতাকা। মুহূর্তেই পাল্টে গেল গোটা স্টেডিয়ামের চিত্র।
সিদ্ধান্তে অসম্মতি জানিয়ে আবাহনীর ফুটবলাররা তেড়ে গেলেন লাইন্সম্যানের দিকে। পাশাপাশি গ্যালারিতে উপস্থিত দলটির কয়েকশ ভক্ত-সমর্থক জানাল তীব্র অসন্তোষ। কেউ কেউ তো বেষ্টনী ডিঙ্গিয়ে মাঠে প্রবেশের চেষ্টাও করলেন। তাতে খেলা বন্ধ থাকল দশ মিনিটেরও বেশি।
পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়ে ফের চালু হওয়ার পর হতাশাগ্রস্ত আবাহনী সমতাসূচক গোল আর পেল না। উল্টো যোগ করা সময়ে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করে সব হিসাবনিকাশ শেষ করে দিলেন জোনাথন ফার্নান্দেস। ১১ বারের চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করে ফেডারেশনের কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিল শিরোপাধারী বসুন্ধরা।

বৃহস্পতিবার পিছিয়ে পড়েও বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আবাহনীকে ৩-১ ব্যবধান হারাল অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। আগামী রবিবার একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে আসরের ফাইনাল। সেখানে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা।
উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের প্রথমার্ধে আবাহনীকে এগিয়ে নেন ব্রাজিলিয়ান ফ্রান্সিস্কো তোরেস। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বসুন্ধরাকে সমতায় ফেরান ব্রাজিলিয়ান জোনাথন। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর কোনো গোল না হওয়ায় লড়াই গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বসুন্ধরাকে লিড এনে দেন আর্জেন্টাইন রাউল বেসেরা। পরে ব্যবধান আরও বাড়ান জোনাথন।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ঠাসা ম্যাচে ৩০তম মিনিটে গোল পেয়ে যায় আবাহনী। ডান প্রান্ত থেকে কের্ভেন্স বেলফোর্টের বাড়ানো বলে ডি-বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভেদ করেন তোরেস। তবে প্রথমার্ধের অধিকাংশ সময়ে বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল বসুন্ধরার পায়ে।

বিরতির পর ধারা বজায় রেখে ম্যাচের ৫১তম মিনিটে সমতায় ফেরে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোনাথনের বুলেট গতির শট বারে লেগে ভেতরে ঢুকে আবার ফিরে আসে। এরপর আলগা বলে হেড করে নিশানা ভেদ করেন বেসেরা। তবে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, জোনাথনের শটেই বল গোললাইন অতিক্রম করে যায়।
১-১ সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা। এরপর ১০৯তম মিনিটে স্কোরলাইন ২-১ করেন বেসেরা। মাসুক মিয়া জনির থ্রু বল পেয়ে ডান প্রান্ত থেকে দারুণ একটি ক্রস করেন মতিন মিয়া। তা কাজে লাগিয়ে গোলপোস্টের কাছ থেকে জাল কাঁপান বেসেরা। আসরে এটি তার চতুর্থ গোল। চার ম্যাচের প্রতিটিতেই গোলের স্বাদ পেলেন তিনি।
পাঁচ মিনিট পরে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে আবাহনী। বাম প্রান্ত থেকে জুয়েল রানার ক্রসে হেড করলেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি নাবীব নেওয়াজ জীবন। এর কিছু সময় পরই তৈরি হয় উত্তেজনা-নাটকীয়তা। তারপর ব্রাজিলিয়ান রবসনের পাস থেকে জোনাথানের গোলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফেডারেশন কাপের ফাইনালে ওঠে কিংসরা।
Comments