মহামারি সত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতি সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

মহামারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন পর্যুদস্ত তখনও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের মহামারি সত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতি সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে।
জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ। ছবি: টিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া

মহামারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন পর্যুদস্ত তখনও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের মহামারি সত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতি সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে।

টানা তৃতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরে মহামারির মধ্যেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলাম যে দেশবাসীর সহায়তায় আমরা এই দুর্যোগ সফলভাবে মোকাবিলা করব, ইনশাআল্লাহ। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে দেশবাসী এ দুঃসময়ে আমার এবং আমার সরকারের পাশে ছিলেন।’

মহামারিতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়লেও প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত অর্থবছরে আমাদের জিডিপি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের প্রাক্কলন অনুযায়ী এ বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৭ দশমিক ৪ শতাংশে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রক্ষেপণ অনুযায়ী জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারে বাংলাদেশের অবস্থান হবে এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।’

অর্থনীতিতে মহামারির অভিঘাত সীমিত রাখতে সরকারের নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন নীতি-সহায়তা এবং উদার-নৈতিক আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে আমরা অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমরা ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি যা মোট জিডিপির ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা সে প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রেখেছি। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় আড়াই কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আমরা নগদ অর্থসহ বিভিন্ন সহায়তার আওতায় এনেছি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

২০০৯ সালের ক্ষমতা গ্রহণের পর গত ১২ বছরের দেশের অগ্রগতিতে তার সরকারের অবদান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১২ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে “সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ” শীর্ষক ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূল করে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা।

‘২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উচ্চ মধ্যম-আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের সমৃদ্ধ-মর্যাদাশীল দেশ। আমরা ২০২১ সালের আগেই উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি। প্রত্যাশিত লক্ষে পৌঁছতে আমরা পথ-নকশা তৈরি করেছি। রূপকল্প ২০৪১-এর কৌশলগত দলিল হিসেবে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ প্রণয়ন করা হয়েছে,’ ভাষণে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহে ২০২১-২০২৫ মেয়াদি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে। যা বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। এ মেয়াদে ১ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষে দারিদ্র্যের হার ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসবে। শেষ বছর ২০২৫ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগ বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে যা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হবে।

আরও পড়ুন:

দ্রুত টিকা নিয়ে আসার সব ধরনের চেষ্টা করছি: প্রধানমন্ত্রী

Comments

The Daily Star  | English
Tofazzal beaten to death at DU

Man beaten to death in DU hall

He was suspected to have stolen students' mobile phones

1h ago