অর্থ কষ্টে কুষাণ গানের শিল্পী অমূল্য বর্মণ

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ২০০৯ সালে সর্বশেষ গানের আসরে ডাক পেয়েছিলেন শিল্পী অমূল্য চন্দ্র বর্মণ। উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী কুষাণ গান গেয়েই চলতো তার সংসার। অমূল্য বর্মণের বয়স এখন ৭৫ বছর। ধরলা নদীর ভাঙনে হারিয়ে গেছে তার ১৭ বিঘা আবাদি জমি, বসতভিটা। স্ত্রী জ্ঞানোময়ী বর্মণকে নিয়ে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের পাশে।
লালমনিরহাটের সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কুরুল কালবিাড়ি গ্রামে অমূল্য বর্মণের জন্ম হয়। অষ্টম শ্রেণির পরে আর লেখাপড়া করা হয়ে ওঠেনি তার। গানের প্রতি ভালোবাসা ছিল ছাত্র জীবন থেকেই। প্রথমে পালা কীর্তন ও যাত্রায় গাইতেন। স্বাধীনতার পরে ১৯৭৩ সালে গড়ে তোলেন কুষাণ গানের দল। তার গান এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসরের বায়না আসতো। সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন অমূল্য বর্মণ।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কুষাণ গান এখন প্রায় বিলুপ্ত। আমার মতো আমার শিষ্যরাও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকার বয়স্ক ভাতা দেয়। পাশাপাশি টিউশনি করে এক বেলার খাবার জুটে যায়। আরেক বেলা উপোস থাকি।’
জ্ঞানোময়ী বর্মণ বলেন, ‘অন্ন কষ্ট জীবনকে বিষাদময় করে তুলেছে। এর মধ্যে একটু প্রশান্তি আছে। আমার স্বামী এখনো বাড়িতে একা একা বসে কুষাণ গান গেয়ে চলেন। তার কণ্ঠে কুষাণ গান শুনতে আমার খুব ভালো লাগে।’
আজকাল অমূল্য বর্মণের অধিকাংশ সময় কাটে ধরলা নদীর তীরে। যেখানে ছিল তার বসতভিটা-আবাদি জমি, সেখানেই ভেজা চোখে বসে থাকেন প্রতিদিন।
Comments