নিখোঁজের ১১ মাস পর স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার
মাদারীপুরের কালকিনিতে ১১ মাস নিখোঁজ থাকা দশম শ্রেণির ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অপহরণ মামলার প্রধান আসামি শাহাবুদ্দিনের দেওয়া স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করে গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব বোতলা এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত মুর্শিদা আক্তার কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার পূর্ব বোতলা গ্রামের চাঁন মিয়া হাওলাদারের মেয়ে। একই গ্রামের মজিদ আকনের ছেলে শাহাবুদ্দিন আকন।
পুলিশ ও মামলার এজাহারের সূত্র জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার ডাসার থানার পূর্ব বোতলা গ্রামের শাহাবুদ্দিন আকনের (২৫) সঙ্গে মুর্শিদার প্রেমের সর্ম্পক ছিল। পরে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ের কথা হয়।
গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টার দিকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে মুর্শিদা বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু, দিন শেষে বাড়ি না ফেরায় তার আত্মীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজির পর ১৯ ফেব্রুয়ারি ডাসার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
মুর্শিদার খোঁজ না পাওয়ায় গত বছরের ৪ মার্চ মা মাহিনুর বেগম বাদি হয়ে শাহাবুদ্দিন আকনকে প্রধান আসামি করে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ডাসার থানায় অপহরণের মামলা করেন।
তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় গত ১৮ ডিসেম্বর তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে দেওয়া হয়। পরে গত ৩১ ডিসেম্বর মামলার প্রধান আসামি শাহাবুদ্দিন আকন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
দুই দিনের রিমান্ডে শাহাবুদ্দিন ডিবি পুলিশকে জানায় যে তার বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের নিচে মুর্শিদার মরদেহ লুকিয়ে রাখা আছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় গতকাল সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে মুর্শিদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মুর্শিদার মা মাহিনুর বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘আমার মেয়েকে শাহাবুদ্দিন ডেকে নিয়ে যায় ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ কিনে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু, ও আর বাড়িতে ফিরতে পারল না।’
মুর্শিদার ছোটখালু রিপন শেখ ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘শাহাবুদ্দিনদের আর্থিক অবস্থা ভালো। শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে মুর্শিদার বিয়ের কথা হলেও মুর্শিদাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় পরে তারা বিয়েতে রাজি ছিল না। এ কারণেই হয়তো মুর্শিদাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার চেষ্টা করেছিল শাহাবুদ্দিন।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘মামলাটি গত ১৮ ডিসেম্বর আমাদের হাতে আসে। তদন্তের স্বার্থে আমরা আসামির রিমান্ড চেয়েছিলাম। রিমান্ডে থাকাকালে তার দেখানো জায়গায় অভিযান চালিয়ে মুর্শিদার মরদেহ উদ্ধার করি।’
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Comments