ফেডারেশন কাপের শিরোপা ধরে রাখল বসুন্ধরা
গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জালের ঠিকানা খুঁজে নিলেন রাউল বেসেরা। আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ডের গোলই গড়ে দিলো ব্যবধান। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিশ্বমানের সেভে নিজেদের জাল অক্ষত রাখলেন আনিসুর রহমান জিকো। তাদের নৈপুণ্যে আসরের পাঁচ ম্যাচের সবগুলোতে জিতে ফেডারেশন কাপের শিরোপা ধরে রাখল বসুন্ধরা কিংস।
রবিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চকর ফাইনালে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ১-০ গোলে হারাল অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। ফেডারেশন কাপে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো তারা। আগের আসরে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে জিতে শিরোপার উৎসব করেছিল দলটি।
ম্যাচ শুরুর চতুর্থ মিনিটেই প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠা সাইফের জালে বল পাঠিয়েছিল বসুন্ধরা। তবে অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় গোলটি। ১৬তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। সাইফের গোলরক্ষককে পাপ্পু হোসেনকে একা পেয়েও জালে বল জড়াতে পারেননি তিনি।
দুই মিনিট পর ম্যাচে নিজেদের প্রথম সুযোগ পায় সাইফ। বসুন্ধরার ডি-বক্সে কেনেথ ইকেচুকু বল বাড়িয়ে দেন জন ওকোলিকে। কিন্তু তার শট চলে যায় গোলপোস্টের ওপর দিয়ে। ২০তম মিনিটে গোলরক্ষক জিকোর দক্ষতায় গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় বসুন্ধরা। মিডফিল্ডার ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন গোটা ম্যাচে দারুণ খেলা এই তারকা।
২৮তম মিনিটে দূরপাল্লার কোণাকুণি শট নেন বসুন্ধরার ফরোয়ার্ড রিমন হোসেন। কিন্তু গোলরক্ষক পাপ্পুকে ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি। চার মিনিট পর আবারও সুযোগ তৈরি করে কিংসরা। ইরানের ডিফেন্ডার খালেদ শাফির থ্রো-ইন সাইফের রক্ষণভাগ বিপদমুক্ত করতে না পারলে পেয়ে যান জোনাথন ফার্নান্দেস। তবে তার শট চলে যায় গোলপোস্ট ঘেঁষে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বাম প্রান্ত থেকে রহমত মিয়ার বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন জিকো। তাতে ম্যাচের শুরুর স্কোর রেখেই বিরতিতে যায় দুদল।
দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিট পরেই এগিয়ে যেতে পারত সাইফ। প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে ফের জোরালো শট নেন রহমত। কিন্তু জিকোকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন তিনি। আরও একবার অসাধারণ কায়দায় নিজেদের গোলপোস্ট রক্ষা করেন অতিমানবে রূপান্তরিত হওয়া জিকো।
৫২তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায় বসুন্ধরা। দুই বিদেশির যুগলবন্দিতে লক্ষ্যভেদ করে তারা। মাঝমাঠ থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন লম্বা করে বল বাড়ান আর্জেন্টাইন বেসেরাকে। এবার আর কোনো ভুল করেননি তিনি। বুক দিয়ে বল নামিয়ে গড়ানো শটে পাপ্পুকে ফাঁকি দেন তিনি। আসরে এটি তার পঞ্চম গোল। পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই জালের ঠিকানা খুঁজে নিলেন তিনি। সমান সংখ্যক গোল নিয়ে গোলদাতাদের তালিকায় শীর্ষে আছেন ইকেচুকুও।
৬৯তম আবারও অসাধারণ সেভ করেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের গোলরক্ষক জিকো। ইকেচুকুর দূরপাল্লার শট লাফিয়ে হাতের ছোঁয়ায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন তিনি। চার মিনিট পর ফের গোলমুখে শট নেন নাইজেরিয়ান ইকেচুকু। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তা।
এগিয়ে যাওয়ায় রক্ষণ জমাট করে খেলতে থাকে বসুন্ধরা। গোল করার চেয়ে হজম না করার দিকেই তাদের মনোযোগ ছিল বেশি। সেই সুযোগে আরও কিছু ভালো সুযোগ তৈরি করে কোচ পল পুটের সাইফ। কিন্তু ম্যাচের শেষভাগে আরও দুবার তাদেরকে হতাশ করেন জিকো।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল দেশের ফুটবলের নবাগত পরাশক্তি বসুন্ধরা। কিন্তু ডান প্রান্ত থেকে বেসেরার নেওয়া শট পাপ্পু রুখে দেওয়ায় স্কোরলাইনে আসেনি পরিবর্তন। তাতে অবশ্য বসুন্ধরার উৎসবে খামতি ঘটেনি।
Comments