রেডিও শ্রোতা ক্লাব

রেডিও এখন আর সচরাচর দেখা যায় না। তবে হারিয়ে যায়নি। এখনও অনেক মানুষ রেডিও শুনেন। তাদের অধিকাংশই স্বাধীনতার আগের প্রজন্ম। রেডিও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ঐতিহ্যবাহী রেডিওকে এখনও ধরে রেখেছেন গ্রাম বাংলার মানুষ, তাদের কেউ কেউ মিলে গড়ে তুলেছেন রেডিও শ্রোতা ক্লাব।
Radio Club.jpg
মালিবাড়ী রেডিও শ্রোতা ক্লাবের কয়েকজন সদস্য। ছবি: স্টার

রেডিও এখন আর সচরাচর দেখা যায় না। তবে হারিয়ে যায়নি। এখনও অনেক মানুষ রেডিও শুনেন। তাদের অধিকাংশই স্বাধীনতার আগের প্রজন্ম। রেডিও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ঐতিহ্যবাহী রেডিওকে এখনও ধরে রেখেছেন গ্রাম বাংলার মানুষ, তাদের কেউ কেউ মিলে গড়ে তুলেছেন রেডিও শ্রোতা ক্লাব।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের মালিবাড়ী গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে এমনই একটি ক্লাব। নাম ‘মালিবাড়ী রেডিও শ্রোতা ক্লাব’। ক্লাবের সদস্য ৫০ জন। সবার বয়স ষাটোর্ধ।

মালিবাড়ী গ্রামে গেলে শোনা যায় রেডিওর খবর ও গান-বাজনা। পুরাতন সুরে বেজে চলে যন্ত্রটি। সবার বাড়িতে রয়েছে রেডিও। গ্রামের বৃদ্ধরা গড়ে তুলেছেন এই ক্লাব। সময় পেলেই তারা চলে আসেন ক্লাবে, সবাই একসঙ্গে রেডিও শুনেন। তবে লালমনিরহাটের অন্য কোনো গ্রামে এই দৃশ্য দেখা যায় না।

ক্লাবের সভাপতি পনির উদ্দিন (৭৫) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, স্বাধীনতার পর তিনি গ্রামে প্রথম রেডিও শ্রোতা ক্লাব গড়ে তুলেছিলেন। কয়েক বছর চলার পর ক্লাবটি আর টেকেনি। আবারও ২০০৮ সালে তিনি পুনরায় ক্লাবটি গড়ে তোলেন এবং রংপুর বেতার থেকে নিবন্ধন নেন।

বর্তমানে ক্লাবটি ভালোই চলছে বলে জানান তিনি।

পনির উদ্দিন বলেন, ‘রেডিওতে প্রচারিত কৃষি ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠান শুনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন মালিবাড়ী রেডিও শ্রোতা ক্লাবের সদস্যরা। রংপুরের ভাওয়াইয়া গান তারা পছন্দ করেন। রেডিওর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে তাদের সংস্কৃতি। রেডিওতে পরামর্শমুলক অনুষ্ঠান শুনে উপকৃত হচ্ছেন গ্রামের কৃষকরা।’

Radio.jpg
শিশুদের নিয়ে রেডিও শুনছেন গ্রামের এক নারী। ছবি: স্টার

ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনতোষ চন্দ্র রায় (৬৭) বলেন, ‘সচরাচর বাজারে রেডিও কিনতে পাওয়া যায় না, আগের মতো রেডিও মেকারও নেই, তাই নতুন রেডিও কিনতে অথবা রেডিও মেরামত করতে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়।’ 

ক্লাবের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন (৬৯) বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে রেডিওর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রেডিও নিজের সঙ্গে বহন করে খেতে খামারে কাজ করা যায়। জানা যায় আবহাওয়ার খবর, ফসলের পরিচর্যার খবর, থাকে অনেক বিনোদনও। তাই রেডিওর প্রতি আমাদের রয়েছে প্রবল আকর্ষণ ও ভালোবাসা। আমি প্রতিদিন রেডিওতে প্রচারিত অনুষ্ঠান ও খবর শুনি।’

ক্লাবের আরেক সদস্য আসমা বেগম (৬৩) জানান, নারীরাও এই ক্লাবের সদস্য। তারা এখানে এসে রেডিও শুনেন। ঘরের কাজকর্ম সম্পর্কে তারা পরামর্শমুলক, কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান শুনেন। তবে রেডিওতে প্রচারিত নারী বিষয়ক অনুষ্ঠানগুলো তাদের বেশি আকর্ষণ করে।

Comments

The Daily Star  | English
Metro now connects Uttara with Motijheel

Uttara-Motijheel Metro: 8am-8pm service not before April

Commuters may have to wait until July for service until midnight on the entire Uttara-Motijheel section, hints Metro rail authorities

7h ago