লোকসানের মুখে লালমনিরহাটের ফুলকপি চাষিরা

ফুলকপির ব্যাপক ফলন। ছবি: স্টার

করোনা পরিস্থিতির কারণে বাইরে থেকে পাইকারি ক্রেতা না আসা এবং সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন লালমনিরহাটের ফুলকপি চাষিরা। কৃষকরা নিরুপায় হয়ে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামেই স্থানীয় সবজি পাইকারদের কাছে তাদের উৎপাদিত ফুলকপি বিক্রি করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করে কৃষকরা ছয় থেকে সাত হাজার টাকা লোকসান গুনছেন বলে জানিয়েছেন ফুলকপি চাষিরা।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার ফুলগাছ গ্রামের ফুলকপি চাষি সাঈদুর রহমান (৪২) জানান, তিনি ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে দুই বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। আট হাজার ৩০০ চারা গাছ থেকে আট হাজার গাছে ফলন এসেছে। খেত থেকে ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের প্রতিটি ফুলকপি তিন থেকে চার টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। অথচ প্রতিটি কপি উৎপাদনেই ব্যয় হয় পাঁচ থেকে ছয় টাকা।

‘গেল বছর এই সময়ে প্রতিটি ফুলকপি গড়ে ১৩ টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম। ফলন আসলে ফুলকপি খেতে রাখা যায় না। এবার তাই বাধ্য হয়েই উৎপাদন খরচের চেয়ে কমদামে বিক্রি করছি’ বলেন সাঈদুর রহমান।

আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি গ্রামের ফুলকপি চাষি সুরেশ চন্দ্র মোহন্ত (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সাত বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করে বিপাকে পড়েছি। গত বছর ফুলকপি চাষে লাভবান হওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। করোনার কারণে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থান থেকে পাইকাররা আসছেন না। তাই স্থানীয় বাজারেই কমদামে ফুলকপি বিক্রি করছি। প্রতি বিঘা জমিতে চার থেকে সাড়ে চার হাজার ফুলকপি চারা চাষ করা যায়। এতে খরচ ২০-২৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।’

লালমনিরহাট শহরের গোশালা বাজারের সবজি পাইকার আক্কাস আলী (৫০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘একসঙ্গে অনেক কৃষক ফুলকপি উৎপাদন করায় স্থানীয় সরবরাহ বেড়ে গেছে অনেক। বাইরে থেকে পাইকার না আসায় আমরা কৃষকদের ফুলকপি কম দরে কিনে কম দরেই বিক্রি করছি।’

প্রতি কেজি ফুলকপি ছয় থেকে সাত টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ঢাকার সবজি পাইকার নূর ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে তারা বাইরে যাচ্ছেন না। এ ছাড়া, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে এ বছর প্রচুর পরিমাণে ফুলকপি চাষ হয়েছে বলে তারা উত্তরাঞ্চল থেকে সবজি কিনছেন না।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর লালমনিরহাট জেলায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২৫০ হেক্টর বেশি।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামিম আশরাফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যেসব কৃষক এক মাসে ফুলকপির ফলন পেয়েছেন, তারা অনেক বেশি লাভবান হয়েছেন। এখন একসঙ্গে সব কৃষকই ফুলকপির ফলন তুলছেন। সে কারণে সরবরাহ বেড়েছে। তাই দামও কম।’

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

1h ago