বেসরকারিভাবেও ভ্যাকসিন বিক্রি করবে বেক্সিমকো: রয়টার্স

বেসরকারিভাবে বিক্রির জন্যও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন কিনবে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল। সেক্ষেত্রে প্রতি ডোজের মূল্য পড়বে আট ডলার।
ছবি: রয়টার্স

বেসরকারিভাবে বিক্রির জন্যও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন কিনবে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল। সেক্ষেত্রে প্রতি ডোজের মূল্য পড়বে আট ডলার।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা। তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেবে সেরাম। যার প্রতি ডোজের মূল্য হবে চার ডলারের মতো। আর বেসরকারিভাবে বিক্রির জন্য কেনা ভ্যাকসিনের প্রতি ডোজের মূল্য পড়বে আট ডলার। অর্থাৎ সরকারি আওতায় আনা দরের দ্বিগুণ।

মঙ্গলবার রয়টার্সকে রাব্বুর রেজা বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি, উভয়ভাবে ব্যবহারের জন্যই সেরাম চলতি মাসের শেষের দিকে ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু করবে।’ প্রত্যেককে এই ভ্যাকসিনের দুটি করে ডোজ দিতে হবে। সাধারণত প্রথম ডোজ দেওয়ার সপ্তাহখানেকের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে।

বেক্সিমকোর সিওও রাব্বুর রেজা রয়টার্সকে আরও বলেন, ‘আগামী মাস থেকেই বেক্সিমকো বাংলাদেশে বেসরকারিভাবেও ভ্যাকসিন বিক্রি শুরু করতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় এর খুচরা মূল্য হবে এক হাজার ১২৫ টাকা (১৩ দশমিক ২৭ ডলার)। বর্তমানে আমাদের (সেরাম-বেক্সিমকো) মধ্যে ১০ লাখ ডোজের চুক্তি রয়েছে। যেখানে আরও ২০ লাখ ডোজ বাড়তে পারে।’

তবে, বাংলাদেশে সরকারিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার কর্মসূচি চালু হওয়ার আগে বেক্সিমকো বেসরকারিভাবে ভ্যকসিন বিক্রি শুরু করবে না বলে আজ বুধবার দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন বেক্সিমকোর সিওও রাব্বুর রেজা।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিনের বৈশ্বিক চাহিদা মেটানোর চেষ্টার অংশ হিসেবেই প্রতিবেশী বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে ভারতের সেরাম। বাংলাদেশের বৃহৎ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো মধ্যে বেক্সিমকো অন্যতম। বেক্সিমকোই বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে।

রাব্বুর রেজা জানান, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের বিকল্প হিসেবে বায়োলজিক্যাল ই ও ভারত বায়োটেকের মতো অনুমোদন পাওয়া ভারতের অন্য ভ্যাকসিন উৎপাদনকারীদের সঙ্গেও প্রাথমিকভাবে আলোচনা করে রেখেছে বেক্সিমকো।

রয়টার্সকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত সেরামই আমাদের অংশীদার এবং আমরা তাদের সঙ্গেই কাজ চালিয়ে যাব, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

‘যদি সরকার অ্যাস্ট্রাজেনেকারটা ছাড়াও অন্য কোনো ভ্যাকসিন চায়, তাহলে সেরাম আরও যে ভ্যাকসিনগুলো নিয়ে কাজ করছে, আমরা সেগুলোর বিষয়েও সেরামের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি’, যোগ করেন রাব্বুর রেজা।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট ভারত সরকারের কাছে প্রতি ডোজ ২০০ রুপি (২ দশমিক ৭৩ ডলার) দরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১০০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন বিক্রির পরিকল্পনা করেছে। প্রাথমিকভাবে এই দরে ১১ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন কিনেছে ভারত সরকার। ভারত সরকার অনুমোদন দিলে বেসরকারিভাবেও প্রতি ডোজ এক হাজার রুপি (১৩ দশমিক ৬৬ ডলার) দরে ভ্যাকসিন বিক্রি করতে চায় সেরাম।

যদিও প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন চুক্তি অনুযায়ী সেরামের কাছ থেকে প্রতি ডোজ ভ্যাকসিন চার ডলারে কিনছে বেক্সিমকো, তবে, ভারত সরকার গড়ে যে দরে সেরামের কাছ থেকে কিনছে, পরে বেক্সিমকোও সেই দরে সমন্বয় করে নেবে বলে জানিয়েছেন রাব্বুর রেজা।

ভারত থেকে ঢাকায় ভ্যাকসিন পাঠানোর পরিবহন খরচ সেরামই বহন করছে বলেও জানিয়েছে রয়টার্স

রাব্বুর রেজা জানান, বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন চুক্তির তিন কোটি ডোজ ছাড়াও বেক্সিমকোর সেরামের কাছ থেকে আরও অতিরিক্ত ভ্যাকসিন কেনার সুযোগ রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচ লাখ ২৪ হাজার ২০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মারা গেছেন সাত হাজার ৮১৯ জন। আর সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৬৮ হাজার ৬৮১ জন।

আরও পড়ুন:

ভারতের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি দামে ভ্যাকসিন কিনবে বাংলাদেশ: রয়টার্স

ভ্যাকসিনের প্রথম চালান আসবে ২১-২৫ জানুয়ারি

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago