চাটখিল: আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত, বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল
আসন্ন নোয়াখালীর চাটখিল পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় প্রার্থী মনোনীত করতে পারলেও বিএনপি এখনো পারেনি। দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি।
সম্প্রতি বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে দু’পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে।
জানা গেছে, চাটখিলে বিএনপির দুই গ্রুপ থেকে চার জন মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ চার জন হচ্ছেন- চাটখিল পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তফা কামাল, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান সামছুল আরেফিন শামীম এবং সাবেক ছাত্র নেতা মো. আহছানুল হক মাসুদ ও পৌর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এবং চাটখিল পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. নূর নবী।
গত ১৯ ডিসেম্বর বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের তথ্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ নিয়ে চাটখিল উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকনের অনুসারী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহজাহান রানা ও পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা কামাল আলোচনা সভার আয়োজন করেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাবের হোসেন।
তবে, অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পর মামুনের অনুসারীরা দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে হামলা চালিয়ে সভা পণ্ড করে দেন। এ সময়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১৪-১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশও হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১৯ ডিসেম্বর রাতেই উভয় পক্ষের ৩৮ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ ও ১০০-১৫০ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় চাটখিল উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহজাহান রানা, পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান শামছুল আরেফিন শামীম ও রামনারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী ভূট্টসহ সাত জনকে গত ২২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ও পৌর বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে। দলের নেতাকর্মীদের অবস্থা এমনিতেই নাজুক। এর ওপর দলীয় কোন্দলে মামলা ও হামলার কারণে সাংগঠনিক অবস্থা অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ার অবস্থায়। খুব শিগগির দলের সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে এই অবস্থার অবসান না হলে আগামী পৌর নির্বাচনে ভোট করার মতো কর্মী খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুনর রশীদ মামুন বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের তদারকিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা কমিটির সুপারিশে পৌর মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
দলীয় কোন্দলের ব্যাপারে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘তৃণমূল নেতাদের মধ্যে পদবঞ্চিত কিছু মানুষ গ্রুপিং করার চেষ্টা করছে। এখানে বিরাজমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবদুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা রিসিভ কল করেননি।
Comments