নটরাজনের ‘রূপকথা’: এক সফরে তিন সংস্করণেই অভিষেক

নিজের গায়ে চিমটি কেটে তিনি বিশ্বাস করার চেষ্টা করছেন না তো বাস্তব নাকি কল্পনা? হলেও হতে পারে!
natarajan test
ছবি: টুইটার

থাঙ্গারাসু নটরাজনের মনের অবস্থাটা এখন ঠিক কী রকম? আনন্দের ঢেউয়ের উচ্চতা আকাশ ছুঁয়ে ফেলছে? তিনি কী ভাবছেন? ভাবকে ভাষায় প্রকাশের উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না? নিজের গায়ে চিমটি কেটে বিশ্বাস করার চেষ্টা করছেন না তো বাস্তব নাকি কল্পনা? হলেও হতে পারে!

ভারতের চলমান অস্ট্রেলিয়া সফরে রূপকথারই জন্ম দিয়েছেন তামিলনাড়ুতে জন্ম নেওয়া নটরাজন। ২৯ বছর বয়সী এই বাঁহাতি পেসার গড়েছেন নতুন এক ইতিহাস। ভারতের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে কোনো সফরে তিন সংস্করণের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই অভিষেক ঘটেছে তার। অথচ শুরুতে কোনো স্কোয়াডেই ছিলেন না তিনি!

সবশেষ আইপিএলে নজর কাড়ায় প্রথমে টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পান নটরাজন। কেন? চোটের কারণে ছিটকে যান বরুণ চক্রবর্তী। এরপর ওয়ানডে দলেও ঠাঁই মেলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের এই বোলারের। নবদ্বীপ সাইনির পিঠে ব্যথা থাকায় ব্যাক-আপ হিসেবে নির্বাচিত করা হয় তাকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দক্ষতা আর সামর্থ্যের ছাপ রাখায় তাকে টেস্ট সিরিজের জন্য ‘নেট বোলার’ হিসেবে রেখে দেয় ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।

সাদা পোশাকে খেলার সুযোগও হয়তো মিলত না। স্কোয়াডে একগাদা পেসার রেখেছিল ভারত। কিন্তু নটরাজনের জন্য ‘শাপে বর’ হয়ে আসে সতীর্থদের চোট। ইশান্ত শর্মা টেস্ট সিরিজের আগেই বাদ পড়েন। প্রথম টেস্টের পর মোহাম্মদ শামি ও দ্বিতীয় টেস্টের পর উমেশ যাদব কাটা পড়েন। তৃতীয় টেস্টের পর তাদের সঙ্গী জসপ্রিত বুমরাহ। তাতেই নটরাজন সুযোগ পেয়ে গেছেন একাদশে।

natarajan test
ছবি: টুইটার

শুক্রবার ব্রিসবেনে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্ট মাঠে গড়িয়েছে। ভারতের ৩০০তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অভিষেক ঘটেছে নটরাজনের। প্রথম দিনশেষে ৫ উইকেটে ২৭৪ রান তুলে অজিরা এগিয়ে থাকলেও আরও একবার বল হাতে দ্যুতি ছড়ান তিনি। ২০ ওভারে ৬৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে তিনিই এদিন ভারতের সবচেয়ে সফল বোলার।

সফরকারীদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়ার ১১৩ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ভাঙেন নটরাজন। ম্যাথু ওয়েডকে শর্ট বলে পরাস্ত করে প্রথম টেস্ট উইকেটের অমৃত স্বাদ উপভোগ করেন তিনি। পরে তার আরেকটি শর্ট বলে উইকেট খোয়ান সেঞ্চুরিয়ান মার্নাস লাবুশেন।

অথচ লাবুশেনকে অনেক আগেই সাজঘরে ফেরাতে পারতেন নটরাজন। ৩৭ রানে প্রথমবার বেঁচে যাওয়া এই অজি ব্যাটসম্যান তখন খেলছিলেন ব্যক্তিগত ৪৮ রানে। সেসময় স্লিপে ক্যাচ জমাতে ব্যর্থ হন চেতেশ্বর পূজারা। পরে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন লাবুশেন।

টেস্ট অভিষেকের দিনটির মতো ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি অভিষেকেও উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন নটরাজন। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে তার বোলিং ফিগার ছিল ১০-১-৭০-২। টি-টোয়েন্টি সিরিজে অবশ্য তিন ম্যাচের সবকটিতেই খেলেন তিনি। প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেটসহ সিরিজে নেন মোট ৬ উইকেট। নটরাজনের পারফরম্যান্স এতটাই উজ্জ্বল ছিল যে, সিরিজসেরা হওয়া হার্দিক পান্ডিয়া তার সঙ্গে পুরস্কার ভাগাভাগির কথা বলেছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago