অভিমানে কাঁদলেন সুচন্দা, পদক হাতে কাঁদলেন সোহেল রানা!
চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদান রাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯-এ আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও কোহিনূর আক্তার সুচন্দা। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এই সম্মাননা পদক গ্রহণ করেছেন অভিনেতা ও প্রযোজক সোহেল রানা। কিন্তু, এক সপ্তাহ আগে শরীরে অস্ত্রোপচার হওয়ায় এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি সুচন্দা। তার পক্ষ থেকে তার কন্যা পদক গ্রহণ করেন।
কোহিনূর আক্তার সুচন্দা অনুষ্ঠানে হাজির হতে না পারলেও ছেলে ও মেয়েকে দিয়ে তার অনুভূতির কথা লিখে পাঠিয়েছিলেন। যা পড়তে বলেছিলেন ছেলে তপু রায়হানকে। কিন্তু, তা পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি এই আয়োজনে।
কোহিনূর আক্তার সুচন্দা আজ রোববার বিকেলে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমার বাইপাস হয়েছে, এ কারণে আমি অনুষ্ঠানে উপস্থিতি থাকতে পারিনি। থাকতে পারবো না বলেই আমার কিছু অনুভূতির কথা লিখে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু, তা অনুষ্ঠানে পড়তে পারেনি আমার ছেলে। আয়োজকরা আমাকে কয়েকবার লেখা ঠিক করে এক পাতার মধ্যে সবকিছু লিখতে বলেছিল। আমি সেইভাবে লেখাটা তৈরি করে পাঠিয়েছিলাম। এটা পড়তে হয়তো ৩ মিনিটে মতো সময় লাগতো। কিন্তু, সেটা পড়তে দেওয়া হয়নি। আমি কেন অনুষ্ঠানে যাইনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হয়তো জানেনই না। আমি তার কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ। কিন্তু, আয়োজনের সঙ্গে যারা ছিলেন তারা আমাকে কেন এমন অপমান করলেন? কী পেলাম এতোদিন চলচ্চিত্রে থেকে?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে-মেয়ে সেখানে গিয়ে অপমানিত হলো। একটু কী সময় দেওয়া যেত না। অথচ, অন্যজন এতো কথা বলল। চলচ্চিত্র নিয়ে আমারও অনেক ভাবনার কথা ছিল। এটা যারা আয়োজনে ছিলেন তাদের সমস্যা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হয়তো এইসবের কিছুই জানেন না বলে আমার ধারণা। আমার বোন অভিনেত্রী ববিতাকে কোনো আমন্ত্রণই জানানো হয়নি জাতীয় পুরস্কার অনুষ্ঠানে। ২০১৮ সালে তিনি আজীবন সম্মাননা পুরস্কার নিয়েছেন। এতো অনিয়ম কেন হবে। শেষ বয়সে এমন অপমানিত হবো ভাবিনি।’ (মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী কোহিনূর আক্তার সুচন্দা)
অভিনেতা ও প্রযোজক সোহেল রানা আজীবন সম্মাননা পদক গ্রহণ করে অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এই সম্মাননা পদক আমি বঙ্গবন্ধুর পদতলে উৎসর্গ করলাম। এই বঙ্গবন্ধুর জন্যই আমি অভিনয়ে। তিনি আমার রাজনীতির আদর্শ, আমার জীবনের আদর্শ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবনের শেষ সায়াহ্নে এসে সম্মাননা পেলাম। অনেক আশা করে এসেছিলাম বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত থেকে পদকটি নেব। কিন্তু, করোনার কারণে তা আর হলো না। আমার হয়তো আর এমন মঞ্চে পুরস্কার নেওয়ার সুযোগ হবে না।’
শব্দগুলো উচ্চারণের সময় কণ্ঠ ভারি হয়ে আসছিল সোহেল রানার। একপর্যায়ে উচ্চস্বরে কেঁদে ফেলেন এই প্রযোজক ও নায়ক।
Comments