একজন আলোকিত মানুষ মমতাজউদদীন আহমদ

মমতাজউদদীন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

তার অভিনয় দর্শকদের হাসিয়েছে, কাঁদিয়েছে। তার লেখা মঞ্চ নাটকগুলো ঢাকার মঞ্চ নাটককে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তার লেখা টেলিভিশন নাটক কোটি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। তিনি মমতাজউদদীন আহমদ।

যেসব নাট্যজনের আলোয় আলোকিত হয়েছে এদেশের নাট্যাঙ্গন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম।

একাধারে নাট্যকার, অভিনেতা, লেখক ও অধ্যাপক ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি একজন ভাষা সৈনিক। সব মিলিয়ে তিনি একজন আলোকিত মানুষ।

সফল নাট্যকার হিসেবে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার অর্জন করেন ১৯৭৬ সালে। ১৯৯৭ সালে পান একুশে পদক।

এছাড়াও আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার এসেছে তার ঘরে।

প্রখ্যাত এই নাট্যকারের লেখা– ‘কি চাহ শঙ্খচিল’ ও ‘রাজা অনুস্বরের পালা’ বই দুটি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীতে তালিকাভুক্ত।

তার লেখা নাটক তালিকাভুক্ত হয়েছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচিতে।

আপাদমস্তক একজন সফল মানুষ ছিলেন তিনি। শিল্প-সাহিত্যের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল প্রবল।

বেঁচে থাকলে আজ ৮৭ বছরে পা দিতেন তিনি।

তার লেখা সাড়া জাগানো মঞ্চ নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সাতঘাটের কানাকড়ি’, ‘বকুলপুরের স্বাধীনতা’, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, ‘বর্ণচোরা’, ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’, ‘সুখী মানুষ’, ‘বিবাহ’, ‘রাজার পালা’, ‘সেয়ানে সেয়ানে’, ‘কেস’, ‘উল্টোরঙ্গ’, ‘হৃদয় ঘটিত ব্যাপার স্যাপার’ ইত্যাদি।

টেলিভিশন ও বেতারের জন্যও প্রচুর নাটক লিখেছিলেন তিনি।

টেলিভিশনের জন্য তার লেখা প্রথম নাটকের নাম ‘দখিনের জানালা’। নাটকটি প্রযোজনা করেছিলেন আতিকুল হক চৌধুরী।

তার লেখা ‘সহচর’ নাটকটি বিটিভির ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত নাটকের মধ্যে একটি। এই নাটকে তিনি স্কুল শিক্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেও সবার প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।

‘সহচর’ নাটকটি প্রযোজনা করেন নওয়াজেশ আলী খান।

তার লেখা আরও একটি সাড়া জাগনো নাটক ‘কূল নাই কিনার নাই’। কাজী আবদুল ওয়াদুদের উপন্যাস থেকে নাটকটির নাট্যরূপ দিয়েছিলেন তিনি। নাটকটি প্রযোজনা করেন মোস্তফা কামাল সৈয়দ। এতে অভিনয় করেন সুবর্না মুস্তাফা, আফজাল হোসেন ও আসাদুজ্জামান নূর।

হুমায়ূন আহমেদের ‘নন্দিত নরকে’ ও ‘শঙ্খনীল কারাগার’ নাটক দুটিতে অভিনয় করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলেন মমতাজউদদীন আহমদ।

তার লেখা শতাধিক বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- বাংলাদেশের থিয়েটারের ইতিবৃত্ত, বাংলাদেশের নাটকের ইতিবৃত্ত, এক যে মধুমতী, সজল তোমার ঠিকানা, এক যে জোড়া, অন্ধকার নয় আলোর দিকে, সাহসী অথচ সাহস্য, মহানামা মহাকাব্যের গদ্যরূপ ইত্যাদি।

২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি মমতাজউদদীন আহমদের জীবদ্দশায় শেষ জন্মদিনে পরিবার ও তার উপস্থিতিতে ঘোষণা করা হয়েছিল ‘অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার’ দেওয়া হবে। পরের বছর জন্মদিন তিনি দেখে যেতে পারেননি, তবে পুরস্কারটি দেওয়া হয়েছিল।

আজ সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায় পালিত হবে সব্যসাচী নাট্যকার মমতাজউদদীন আহমদের ৮৭তম জন্মদিন। আজকের অনুষ্ঠানে তাকে স্মরণ করা হবে গভীর শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায়।

Comments

The Daily Star  | English
Starlink logo

BTRC approves licence for Starlink

This is the swiftest recommendation from the BTRC for any such licence, according to a BTRC official.

9h ago