সাকিব, মোস্তাফিজ, হাসানদের সামনে দাঁড়াতেই পারল না উইন্ডিজ

Bangladesh cricket team
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

কুয়াশায় ঢাকা দিনে বোলারদের জন্য ছিল অনুকূল পরিবেশ। দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলের সামর্থ্য নিয়ে ছিল প্রশ্ন। তা খোলাসা হলো খেলতে নেমেই। মোস্তাফিজুর রহমানের দারুণ শুরুর পর বল করতে এসেই ক্যারিবিয়ানদের কাছে আতঙ্ক হয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান। শুরুতে তাল না পেলেও পরে চমৎকার মুন্সিয়ানা দেখালেন অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ। সফরকারীরা থামল দেড়শোর অনেক আগে।

মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের দাপটে মাত্র ১২২ রানে অলআউট হয়ে গেছে ক্যারিবিয়ানরা। মাত্র ৮ রান দিয়েই ৪ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। ২৮ রানে ৩ উইকেট তুলেন হাসান। মোস্তাফিজ ২০ রান দিয়ে আউট করেন দুই ওপেনারকে।

প্রথম ওভারে রুবেল হোসেনকে ছক্কা মেরে শুরু করেছিলেন সুনিল আম্রিস। মোস্তাফিজের দ্বিতীয় ওভারেই কাটা পড়েন তিনি। বল ভেতরে ঢোকানো নিয়ে অনেকদিন থেকেই কাজ করছিলেন মোস্তাফিজ। সেই কাজের ফল কিছুটা পাওয়া গেল। ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে ভেতরে ঢোকা বলেই এলবিডব্লিউ বানালেন তিনি।

এরপর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় এক ঘন্টা। কিন্তু কোন ওভার কাটা যায়নি। শুরুর পরই আবার সাফল্য আনেন মোস্তাফিজ। তার বেরিয়ে যাওয়া বলে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন জশুয়া ডি সিলভা। দ্বিতীয় স্লিপে লাফিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ জমান লিটন দাস।

২৪ রানে ২ উইকেট পড়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন আন্দ্রে ম্যাকার্থি আর জেসন মোহাম্মদ। কিন্তু ব্যাট বল লাগাতেই যেন ধুঁকছিলেন তারা। রান আনতে খেটে মরেছেন। ২১ রান যোগ করে অবশেষে থামেন মন্থর জুটি। ১৫ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে নিজের দ্বিতীয় ওভারে ম্যাকার্থিকে বোল্ড করেন। সাকিবের বলে সুইপ করার বিলাসিতায় ৩৪ বলে ১২ করে থামেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান।

খানিক পর জেসনও থামান সংগ্রাম। সাকিবের বলে ডিফেন্স করতে গিয়েই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যায় তার পা। বল মিস করায় মুশফিক দ্রুত তা ধরে ভেঙ্গে দেন স্টাম্প। পরের ওভারে সাকিব ধরেন আরেক শিকার। এবার নিকারুমাহ বোনারকে এলবিডব্লিউ বানিয়ে ক্যারিবিয়ান ইনিংস অর্ধেক শেষ করে দেন তিনি। মাত্র ৫৬ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে তারা।

এরপরই প্রতিরোধ গড়েন কাইল মায়ার্স-রোবম্যান পাওয়েল। ক্যারিবিয়ানদের এই দলে মোটামুটি নামকরা পাওয়েলই।  তার কারণও বোঝান নেমেই। মিরাজকে ছক্কায় উড়িয়ে শুরু। অন্য প্রান্তে অভিষিক্ত মায়ার্সও পান ছন্দ। দুজনে মিলে ৬ষ্ঠ উইকেটে আনেন ৫৯। সেটাই তাদের সবচেয়ে বড় জুটি। মিরাজকে ঘুরিয়ে চায়, হাসান মাহমুদকে দারুণ দুই বাউন্ডারিতে মায়ার্স বুঝিয়ে দেন ব্যাট হাতে পটু তিনি।

অভিষেকের স্নায়ুচাপে শুরুতে কিছুটা ভুগেছেন হাসান। নিজের পঞ্চম ওভারেই পেয়ে যান তাল। গুরুত্বপূর্ণ এই জুটি ভাঙ্গেন তিনি। পাওয়ালকে দারুণ এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান। ওই ওভারেই ফেরান রেমন রেইফারকে। তবে হাসানের বলে রেইফার কিছুটা দুর্ভাগা ভাবতে পারেন নিজেকে। আগেই দুটি রিভিউ শেষ হয়ে যাওয়ায় এলবিডব্লিউর আউট চ্যালেঞ্জ করতে পারেননি সফরকারীরা। বল ট্রাকিং টেকনোলজি জানান দেয় রিভিউ হাতে থাকলে বেঁচে যেতেন রেইফার।

পরের ওভারেই বিদায় নেন মায়ার্স। ৫৬ বলে ৪০ করা এই বাঁহাতি মিরাজের বলে ক্যাচ দেন স্লিপ্লে। টপ অর্ডার, মিডল অর্ডার যেখানে পারেনি। টেল এন্ডার থেকে আর কোন প্রতিরোধ আশা করা ছিল বাড়াবাড়ি। হয়ওনি।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩২.২ ওভারে ১২২   (আম্রিস ৭, জশুয়া ৭ , ম্যাকার্থি ১২, জেসন ১৭, মায়ার্স ৪০,   বোনার ০, পাওয়েল ২৮, রেইফার ০, জোসেফ ৪  , আকিল ১, হোল্ডার ০* ; রুবেল ০/৩৪ , মোস্তাফিজ ২/২০, হাসান ৩/২৮, সাকিব ৪/৮, মিরাজ  ১/২৯)

 

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda urges unity, quick action to institutionalise democracy

She also demanded a comprehensive list of victims of abduction, murder, and extrajudicial killings

Now