শ্রমিকদের বিকল্প শ্রমবাজারে পাঠাতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
করোনা সংক্রমণের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের তেল নির্ভর অর্থনীতির দেশগুলোতে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি করোনা পরবর্তী সময়ে আগের মতো আর নাও থাকতে পারে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সে বিবেচনায় শ্রমিকদের মধ্যপ্রাচ্যের পাশাপাশি বিকল্প শ্রমবাজারে পাঠানো লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানতে চেয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ থেকে বাংলাদেশে যেসব শ্রমজীবী মানুষ ফেরত এসেছে, তাদের মধ্যে অনেকে চাকরি হারিয়েছে। অনেকে ভিসা জটিলতায় যেতে পারেনি। নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক পাঠানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী অধ্যুষিত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে কোভিডকালে চাকরিচ্যুত প্রবাসীদের সার্বিক কল্যাণে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফোনে যোগাযোগ করা ছাড়াও পত্র পাঠানো হয়েছে। পত্রে তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো— চাকরিচ্যুত প্রবাসী কর্মীদের ন্যূনতম খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, চাকরিচ্যুত কর্মীদের যাবতীয় দেনা-পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থাসহ ছয় মাসের বেতন-ভাতা প্রদান-পূর্বক দেশে ফেরত প্রেরণ এবং প্রবাসী শ্রমিকদের বিদেশে কর্মসংস্থান এবং ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য ওইসব দেশগুলো ‘কোভিড-১৯ রিকভারি অ্যান্ড রেসপন্ড ফান্ড’ গঠনের সুপারিশ।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসা প্রবাসীদের মধ্যে যারা পুনরায় সেসব দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক, তাদের পুনরায় সেসব দেশে বা অন্য দেশে প্রেরণ ও পুনর্বাসনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং নিয়মিত ভার্চুয়াল সভা করা হচ্ছে। এ ছাড়া, দেশে এসে আটকে পড়া কর্মীদের ভিসার মেয়াদ বাড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা যেন বিনা বাধায় কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রবাসী কর্মীদের যারা বেকার হয়ে পড়েছেন, তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন দেশে প্রবাসী প্রবাসী কর্মীদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার ফলে ইতোমধ্যে অনেক কর্মী নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরত যেতে সক্ষম হয়েছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের তেল নির্ভর অর্থনীতির দেশগুলোতে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি করোনা পরবর্তী সময়ে আগের মতো আর নাও থাকতে পারে, সে বিবেচনায় শ্রমিকদের মধ্যপ্রাচ্যের পাশাপাশি বিকল্প শ্রমবাজারে পাঠানো লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে নতুন শ্রমবাজার সন্ধান করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সাময়িকভাবে কর্মী প্রেরণ করা সম্ভব না হলেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আশানুরূপভাবে কর্মী প্রেরণ শুরু হয়েছে— বলেন প্রধানমন্ত্রী।
Comments