মৃত ও প্রবাসীরাও ভোট দিয়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌর নির্বাচনে!

কুষ্টিয়ায় সদ্য শেষ হওয়া পৌরসভা নির্বাচনে মিরপুর পৌরসভার একটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর অনুকূলে ৮৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোট কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ওই কেন্দ্রে বিদেশে অবস্থান করা প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তিরাও ভোট দিয়েছেন, এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কুষ্টিয়া
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

কুষ্টিয়ায় সদ্য শেষ হওয়া পৌরসভা নির্বাচনে মিরপুর পৌরসভার একটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর অনুকূলে ৮৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোট কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ওই কেন্দ্রে বিদেশে অবস্থান করা প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তিরাও ভোট দিয়েছেন, এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ১৬ জানুয়ারি মিরপুর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সাধারণ ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হয়। ওই নির্বাচনে মিরপুর উপজেলার নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন।

নির্বাচনের পর গত ১৮ জানুয়ারি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আরিফুর ও বিএনপি মেয়র প্রার্থী রহমত আলাদা সংবাদ সম্মেলনে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে পুরো নির্বাচন বাতিলের দাবি করেন।

ওই সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর মৃত ব্যক্তি ও বিদেশে থাকা কয়েকজন প্রবাসী ভোটারের নাম উল্লেখ করে বলেন তারাও নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।

আরিফুর অভিযোগ করেন, ‘পৌরসভার নওপাড়া এলাকার বাসিন্দা আতর আলী শেখ (৬২) বার্ধক্যের কারণে গত ৬ আগস্ট মারা যান। একই এলাকার রাবেয়া খাতুন (৭৮) গত ১০ জুলাই এবং নূর ইসলাম প্রামাণিক (৫০) গত ২১ ডিসেম্বর মারা যান। অথচ ওই কেন্দ্রে তাদের নামেও ভোট পড়েছে।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘রব্বান মালিথা নামের আরেক ব্যক্তি যিনি দীর্ঘদিন প্রবাস যাপন করছেন, তিনি ওইদিন ভোট দিয়েছেন।’

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী উদ্যোগ নেব।’

এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেছেন। মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকায় থাকার কথা নয়। যেখানে এ অভিযোগ করা হচ্ছে সেখানে সাধারণ ব্যালটে ভোট হয়েছে। তাই এমনও হতে পারে পুরাতন ভোটার তালিকা ধরে এসব ভোট দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী এনামুল হক বলেন, ‘এসব দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা সামনে এনে যারা পুরো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছেন, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয়।’

উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে এই প্রার্থী প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে আহবান জানিয়েছিলেন।

এই অভিযোগটি এমন সময়ে এলো যখন কুষ্টিয়ার আরেক পৌরসভা নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বিশোদগার করে হাইকোর্টের রুলের সম্মুখীন হয়েছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার।

কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন অফিসের হিসাব থেকে দেখা যায়, পৌরসভার মোট ১০টি কেন্দ্রে গড়ে ভোট পড়েছিল ৮৪.৯৬ শতাংশ। এর মধ্যে ৭টিতে ৮০ শতাংশের ওপরে, দুটি কেন্দ্রে ৭৯ শতাংশের ওপরে এবং নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শতভাগ।

নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মোট ভোটার ১ হাজার ৪১৫ জন। সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ২৪ ভোট। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রহমত আলী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১৭৬ ভোট। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান মোবাইল প্রতীকে পেয়েছেন ১৭১ ভোট। বাতিল হয়েছে ৪৪ ভোট।

মিরপুর পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক মোট ১০ হাজার ৪২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমান পান ২ হাজার ৫৪৭ ভোট। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রহমত আলী পান ১ হাজার ৭৩৬ ভোট।

Comments

The Daily Star  | English

Quota protests on; govt looks to SC for a way out

For the second consecutive day, students demonstrating against the quota system for government jobs occupied key city intersections, bringing traffic  to a halt for hours.

4h ago