উইন্ডিজকে উড়িয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

Tamim Iqbal & Shakib Al Hasan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এদিনও বোলিংয়েই আসল কাজটা করে ফেলেছিল বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসানদের আবারও সামলাতে খাবি খেয়েছে সফরকারীরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অল্প রান পেরুতে ব্যাটিংয়ে কাজটা ছিল অনেকটা আনুষ্ঠানিকতার। তা অনায়াসে সেরে সিরিজ নিশ্চিত করল তামিম ইকবালের দল।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে  রীতিমতো ১০০  বল হাতে রেখে বাংলাদেশ জিতল ৭ উইকেটে । আগের দিন ১২২ রান তাড়াতেই বেশ ভুগতে হয়েছিল স্বাগতিকদের। এদিন কন্ডিশন ছিল আরেকটু ভালো। এবার দেড়শো রান পেরুতেও তাই খুব একটা বেগ পেতে হলো না । লিটন দাস ঝলমলে শুরু করে ইনিংস টানতে না পারলেও অধিনায়ক তামিম ইকবাল করলেন ফিফটি। চারে নেমে রান পেলেন সাকিবও। দলকে জিতিয়ে ৫০ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন তিনি। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৯ রানে।

১৪৯ রান তাড়ায় লিটন দাস শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। মাঝ ব্যাটে বল লাগছিল তার। এই ডানহাতির ব্যাটে  আভাস ছিল বড় রানের। কাভার অঞ্চল দিয়েই বের করছিলেন রান। চার বাউন্ডারিতে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আগের দিনের মতো আবারও তাকে ছেঁটেছেন আকিল হোসেন।

বাঁহাতি স্পিনার বল করতে এসেই ফেরান লিটনকে। এবার অফ স্টাম্প বরাবর বল ফেলে সামান্য বাঁকে পরাস্ত করেন লিটনকে। রিভিউ নিয়েও এলবিডব্লিউর হাত থেকে বাঁচতে পারেননি বাংলাদেশের ছন্দে থাকা ব্যাটসম্যান।

তিনে নেমে আগের ম্যাচে রান পাননি নাজমুল হোসেন শান্ত। সাকিবের ব্যাটিং পজিশন পাওয়ায় তার উপর ছিল প্রচ্ছন্ন চাপ। সেই চাপ সরাতে দরকার একটা ইনিংস। এদিন তামিমের সঙ্গে জমে যায় তার জুটি। লক্ষ্যের কথা ভাবলে আদর্শ ছিল তাদের ব্যাটিং।

খুব একটা ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদে খেলা শেষ করার দিকে এগুচ্ছিলেন তারা। জুটি রান পঞ্চাশ হওয়ার আগে গড়বড়। শান্ত ফেরেন ঠিক আগের দিনের মতই। এবার জেসন মোহাম্মদের অফ স্পিনে পুলের মতো করতে গিয়ে ওই মিড উইকেটেই দিয়েছেন ক্যাচ।  উইকেট ছুঁড়ে আসা বাঁহাতি এবার ২৬ বলে করেন ১৭ রান।

তামিম শুরু থেকেই বরাবরের মতো ছিলেন ঝুঁকিমুক্ত। উইন্ডিজের পূঁজিটা কম হওয়ায় তামিমের নিজের ভূমিকা পালন করা হয় সহজ। সাকিবের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে আরেকটি জুটে পান তামিম। মন্থর খেলা বাংলাদেশ অধিনায়ক তুলে নেন ওয়ানডেতে তার ৪৮তম ফিফটি। কিন্তু এরপরই বাজে শট বিদায় তার। রেমন রেইফারের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে থামে তামিমের ৭৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস।

মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে বাকি কাজ সেরেছেন সাকিব। ৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শেষ করেছেন খেলা।

এর আগে উইকেট, পরিস্থিতির একদম বিপরীতে গিয়ে আগে টস জিতেও আগে ব্যাট করতে যায় সফরকারীরা। শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের তৈরি করা চাপ তাদের করে ফেলে খোলসবন্দি। তা থেকে পুরো ইনিংসেই আর বের হওয়া হয়নি তাদের। টপ অর্ডারে আসেনি ভালো শুরু, মিডল অর্ডার দেখাতে পারেনি নিবেদন। একের পর এক উইকেট পতনে ইনিংসের মাঝপথেই পথ হারা হয়ে যায় তারা।

৪১ রানেই হারায় ৫ উইকেট। একশোতে যাওয়ার আগে পড়ে যায় ৮ উইকেট। উইন্ডিজের সবচেয়ে বেশি রান এসেছে শেষ দুই উইকেটে। নবম উইকেটে  আলজেরি জোসেফকে নিয়ে ৩২ রান আনেন রভম্যান পাওয়েল। দশম উইকেটে আকিল হোসেনকে নিয়ে আনেন ২৮ রান। আনকোরা এই দলের অভিজ্ঞদের একজন হওয়ার পরও পাওয়ালকে তারা নামিয়েছিল আট নম্বরে। এখন থেকেই ৪১ রান করে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনিই। তার ব্যাটেও মূলত দেড়শোর কাছে যায় ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু এত কম রান করে বাংলাদেশকে নিজেদের চেনা কন্ডিশনে হারিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না তাদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ:   ৪৩.৪ ওভারে ১৪৮   (আম্রিস ৬ , ওটলি ২৪, জশুয়া ৫, ম্যকার্থি ৩ , জেসন  ১১ , মায়ার্স ০, বোনার ২০, রোবম্যান ৪১  , রেইফার ২, আলজেরি ১৭, আকিল  ১২  ; মোস্তাফিজ ২/১৫, রুবেল ০/২৩, হাসান ১/৫৪ , মিরাজ ৪/২৫, সাকিব ২/৩০ )

বাংলাদেশ:  ৩৩.২ ওভারে ১৪৯/৩   (লিটন ২২, তামিম,  শান্ত ১৭, সাকিব ৪২*  , মুশফিক ৯* ; আলজেরি ০/৪২, মায়ার্স ০/১৫, আকিল ১/৪৫ , জেসন ১/২৯, রেইফার ১/১৮)

ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ ২-০ তে এগিয়ে।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka College, City College students clash at Science Lab; traffic halted

A clash broke out between the students of Dhaka College and City College in the capital's Science Laboratory area today

14m ago