উপজেলা পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য হবে ফুডকোর্ট-বিউটি পার্লার
সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জন্য সারা দেশে নির্বাচিত ৭৮টি উপজেলায় ফুডকোর্ট, বিউটি পার্লার ও বিক্রয় কেন্দ্র করতে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৪২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যাক্তাদের বিকাশ সাধন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রকল্পটি এ সপ্তাহে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।’
এই প্রকল্পের আওতায় ৮০টি বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র, ৮০টি ফুডকোর্ট ও ৮০টি বিউটি পার্লার করা হবে। যেখানে এক হাজার ৬০০ নারী উদ্যোক্তাকে স্থায়ীভাবে সাবলম্বী করে তুলতে এগুলো বরাদ্দ দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অনুদান সহায়তা দেওয়া হবে বলে প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া, বেকার, সুবিধাবঞ্চিত নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য দুই দশমিক ৫৬ লাখ নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাদের উত্পাদিত পণ্য বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে বিক্রি করা হবে।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক শফিউল আজম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গ্রামে এখন অনেক বিনোদন পার্ক গড়ে উঠেছে। সেখানে অনেকেই ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঘুরতে যান। আবার উপজেলা শহরে রেস্টুরেন্ট হয়েছে শহরের মতো। মান ভাল হলে ফুডকোর্ট চলবে।
প্রকল্পটি এ বছর শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রকল্পটি এমন সময়ে নেওয়া হচ্ছে যখন করোনা পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে দেশে দারিদ্র্য প্রায় দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। মানুষের আয় কমে গেছে। কেউ কেউ চাকরি হারিয়ে শহর থেকে গ্রামে চলে গেছেন।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এক জরিপে জানায়, মহামারির প্রভাবে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, এক বছর আগে ২০১৯ এর ডিসেম্বরে সার্বিকভাবে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক পাঁচ শতাংশ।
কোভিড-১৯ মহামারির ফলে গত বছরের শেষ নয় মাসে আয় কমে যাওয়া ও কর্মচ্যুতির ফলে ৪৮ দশমিক ৭২ শতাংশ ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে এবং ৩২ দশমিক ৪১ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভেঙে জীবন নির্বাহ করেছেন।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটি শুধু উপজেলা পর্যায় নয়, সিটি করপোরেশন ও জেলা শহরেও বাস্তবায়ন করা হবে বলে প্রস্তাবে বলা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রকল্পতো ভালো, তবে বাস্তবায়নের ওপর সাফল্য নির্ভর করছে। কীভাবে, কারা প্রশিক্ষণ দেবে, কীভাবে নির্বাচন করা হবে সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্রামে অনেক নারী উচ্চ মাধ্যমিক বা তারও বেশি ডিগ্রি নিয়ে কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। তাদের কাজে লাগাতে পারলে অর্থের সদ্ব্যবহার হবে।’
Comments