হত্যা মামলার এজাহার পরিবর্তন: পুঠিয়ার সাবেক ওসি শাকিলের বিরুদ্ধে মামলা
রাজশাহীর পুঠিয়ার পরিবহন শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার পরিবর্তনের অভিযোগে পুঠিয়া থানার বহুল আলোচিত সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের আওতায় রাজশাহীতে দুদকের সমন্বিত অফিসে এই মামলা করেন বলে জানান দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের একটি আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা করেছে দুদক।’
শাকিল উদ্দিন আহমদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। ২০২০ সালের মার্চে দ্য ডেইলি স্টার একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ যে, শাকিল জালিয়াতি, জমি দখল, একটি হত্যা চেষ্টাসহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার
পরও পুলিশে কর্মরত ছিল। এরপর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে সিলেট রেঞ্জ পুলিশে বদলি করা হয়।
দুদকের মামলার বিবরণ অনুসারে, পুঠিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১৯ সালের ১১ জুন নুরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছিল।
একই দিন নুরুলের মেয়ে নিগার সুলতানা বাদী হয়ে পরিবহন নেতা আবদুর রহমান পটল এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আহসানুল হক মাসুদসহ আট জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
মামলার বর্ণনায় তিনি অভিযোগ করেন যে, পটলের পক্ষে নির্বাচনী ফলাফলের কারসাজিতে জড়িত ছিলেন পুঠিয়া থানার তৎকালীন ওসি শাকিল উদ্দিন আহমদ।
পরে পুলিশ রাজশাহীর বিচারিক আদালতে এই হত্যা মামলার যে এজাহার জমা দেয়, তাতে দেখা যায়- পটল, মাসুদ ও ওসির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। মামলার বর্ণনাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এজাহারের এই হেরফেরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিগার সুলতানা হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রিটের অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিজেএম) আদেশ দেন।
রাজশাহীর সিজেএম মো. মেহেদী হাসান তালুকদার গত নভেম্বরে রাজশাহী পুলিশের তিন জন অতিরিক্ত সুপারিন্টেনডেন্ট ও ওসি শাকিলসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে হাইকোর্ট রায় দেন যে, শাকিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিঃসন্দেহে গুরুতর এবং শাস্তিমূলক অপরাধ। বিচারিক তদন্তের ভিত্তিতে হাইকোর্ট দুদককে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
তবে শাকিল উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চ্যালেঞ্জ করেন।
২০২০ সালের মার্চে শাকিলের চ্যালেঞ্জ খারিজ করে রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
Comments