'দুর্বল' উইন্ডিজ ও আরও একটি হোয়াইটওয়াশের অপেক্ষা

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এক সময় বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে শক্তিধর ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও তারা। বিশ্ব রেকর্ডের সিংহভাগই ছিল তাদের দখলে। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই শক্তিশালী দলটি আর নেই। নিজেদের শক্তি হারিয়ে কেবল খোলসটাই রয়েছে তাদের। তবে তারপরও প্রথম সারির এ দলটি সীমিত ওভারের ক্রিকেটে একেবারে ফেলে দেবার নয়। অন্তত লড়াই করেই হারে দলটি।

সাম্প্রতিক সময়ের রেকর্ড অন্তত তাই বলে। এ সিরিজের আগে শেষ যে পাঁচটি সিরিজ খেলেছে তাতে তিনটিতে জয় টাইগারদেরই। কিন্তু কোনোবারই দলটিকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি। উল্টো দুটি সিরিজ জয়ের মধ্যেই একবার বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছে তারা। ২০১৪ সালে ক্যারিবিয়ান দ্বীপে গিয়ে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ।

তবে উইন্ডিজকে যে কখনোই হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি বাংলাদেশ, এমনটি নয়। এর আগে ২০০৯ সালে দলটিকে তাদের মাঠেই হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ পেয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু খেলোয়াড়দের বিদ্রোহের কারণে মূল দলের কোনো খেলোয়াড়ই ছিল ক্যারিবিয়ানদের। প্রায় এক যুগ পর আবার সেই দলটিকে হোয়াইটওয়াশ করার পথে বাংলাদেশ। কাকতালীয়ভাবে আবারও ক্যারিবিয়ানরা দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে খেলছে। যদিও এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে সতর্কতার কারণে আসেননি তাদের সেরা তারকারা। কিন্তু মোদ্দাকথা, পূর্ণ শক্তির দল নয় ক্যারিবিয়ানদের।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে পাত্তাই পায়নি এই উইন্ডিজ। দুটি ম্যাচেই সহজে হেরে গেছে তারা। সফরকারীদের অল্প রানে বেঁধে হেসে খেলে জয় পায় টাইগাররা। শেষ ম্যাচে তাই আহামরি কিছু না হলে ফলাফল ভিন্ন কিছু হওয়ার নয়। তবে দল নিয়ে কাঁটাছেঁড়া খুব বেশি হলে নিঃসন্দেহে সুযোগ থাকবে ক্যারিবিয়ানদের। কিন্তু শেষ ম্যাচে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যেতে চাইছেন না টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল, 'তারা বিপজ্জনক দল ও যে কোনো সময় ঘুরে দাঁড়াতে পারে। আমরা খুব অল্প কিছু পরিবর্তন করতে পারি।'

মূলত আগামী বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নিতে এখন থেকেই রেটিং পয়েন্ট ভাবনায় মশগুল তামিম। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের সেরা আটে থাকা লক্ষ্য তাদের। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ডের মতো দলগুলোর বিপক্ষে তাদের মাঠেই খেলতে হবে তাদের। তাই আগামী বিশ্বকাপ ভাবনায় ক্যারিবিয়ানদের সঙ্গে একটি পয়েন্টও হারাতে রাজী নন অধিনায়ক, 'আমরা সিরিজ জিতে গেছি বটে। তবে আরও ১০টি পয়েন্ট পাওয়ার সুযোগ আছে... আশা করি, এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে। কালকের ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। যেটা বলেছি, সিরিজ জিতেছি, কিন্তু আরও ১০ পয়েন্ট পাওয়ার আছে।'

সবমিলিয়ে তাই টাইগারদের লক্ষ্য তাই আরও একটি হোয়াইটওয়াশ। আর তা করতে পারলে ১৩ বার কোনো প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ নিতে পারবে বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে প্রথমবার কেনিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করার পর এখন পর্যন্ত কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানকে মোট ১২ বার ধবলধোলাই করতে পেরেছেন টাইগাররা। 

অন্যদিকে, শেষ ম্যাচে জয় তুলে টেস্ট সিরিজের আগে আত্মবিশ্বাসের রশদ জোগাতে চায় সফরকারীরা। আর চট্টগ্রামের উইকেট দেখে বিশ্বাসও বেড়েছে তাদের। উইন্ডিজ সহকারী কোচ রডি এস্টউইক বললেন এমনটাই, 'এখানে (সাগরিকা) আমাদের বিকেলে অনুশীলন সেশন ছিল। উইকেট ঢাকার চেয়ে ভালো। আমরা এখানে ভালো ব্যাটিং করে বড় স্কোরের আশা করছি।'

সোমবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচে তাই লড়াইয়ের আভাসটা পাওয়া যাচ্ছে স্পষ্ট। আগের দুই ম্যাচে লড়াই করতে না পারার আক্ষেপটা এ মাঠেই ভুলতে চায় ক্যারিবিয়ানরা। আর বাংলাদেশ চায় আরও একটি হোয়াইটওয়াশ।

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

4h ago