শাস্তি প্রত্যাহারের আশ্বাস, ১৬৮ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন খুবির ২ শিক্ষার্থী

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আশ্বাস পেয়ে প্রায় ১৬৮ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত দুই শিক্ষার্থী।
Khubi.jpg
প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। ছবি: স্টার

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আশ্বাস পেয়ে প্রায় ১৬৮ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত দুই শিক্ষার্থী।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।

এর আগে, আজ বিকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (কুয়া) মধ্যস্থতায় ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে একটি আবেদন করেন। পরে উপাচার্য এবং শিক্ষকদের একটি দল তাদের সঙ্গে দেখা করতে যান।

এই দুই শিক্ষার্থী হলেন- বাংলা ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম।

উপাচার্যের কাছে লেখা আবেদনে তারা জানান, গত বছরের ১ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ৫ দফা আন্দোলন চলার সময় শিক্ষার্থীদের অবস্থানস্থলে দুজন শিক্ষকের গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনার আলোকে দুজন শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের যে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়, তার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়।

তাদের (শিক্ষার্থী) অজান্তে কোনো শিক্ষক যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, তবে তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ওই দুই শিক্ষার্থী। এরপর সার্বিক ঘটনা বিবেচনাপূর্বক তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

অনশন ভাঙানোর পর রেজিস্টার খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা দুঃখ প্রকাশ করে আবেদন করেছেন। আমরা বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

অনশন ভঙ্গের পর শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোবারক হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আশ্বাস পেয়ে আমরা অনশন ভঙ্গ করেছি।’

গত বছরের ১ ও ২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফি কমানো, আবাসন সংকট নিরসনসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে শত শত শিক্ষার্থীর সঙ্গে ওই দুই শিক্ষার্থীও আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। সেসময় দুই শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগ তোলা হয় তাদের বিরুদ্ধে।

পরে শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ, তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা না করাসহ বিভিন্ন কারণে তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড।

ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১৭ জানুয়ারি তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। ১৯ জানুয়ারি শুরু হয় অনশন। এরপর বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মোট চার দফা তারা উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন।

খুলনার সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন। তবে কোনো ফল আসেনি। এর মধ্যে দুজনেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে দুজনই আবার অনশনে ফিরে আসেন।

আরও পড়ুন:

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শাস্তি বাতিল চায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

খুবির ২ শিক্ষার্থী হাসপাতালে, অবস্থার আরও অবনতি

খুবি সিন্ডিকেট সভায় ১ শিক্ষককে বরখাস্ত, ২ শিক্ষককে অপসারণের সিদ্ধান্ত

মেয়রের মাধ্যমে খুবি প্রশাসনকে অনশনরত ২ শিক্ষার্থীর চিঠি

শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও শিক্ষক অপসারণে নোটিশের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের শাস্তি শিক্ষক অপসারণ

খুবির ৪ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতি

Comments

The Daily Star  | English

Six killed in Cox’s Bazar landslides amid relentless rain

Six people of two families died last night in separate landslides triggered by relentless rain in Cox’s Bazar Sadar upazila and at a Rohingya camp in Ukhiya upazila.

48m ago