ভয় পাচ্ছি না, ইতিহাসের অংশ হতে চাই

দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিতে যাওয়া নার্স
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ফাইল ছবি

দেশের ইতিহাসের অংশ হতে চেয়েছিলেন রুনু ভেরোনিকা কস্তা। আজ যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দেশের টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন, তখন পূরণ হবে জ্যেষ্ঠ এই নার্সের আকাঙ্ক্ষাও। দেশের ইতিহাসে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন তাকে দেওয়া হবে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে রুনু বলেন, ‘যখন আমি জানতে পারি যে, প্রধানমন্ত্রী কুর্মিটোলা হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন, তখন তৎক্ষণাৎ ভাবলাম, আমাকে কেন নয়? আমি ইতিহাসের অংশ হতে চেয়েছিলাম। আমি আমার (হাসপাতাল) কর্তৃপক্ষকে বলি যে, আমি প্রথমে ভ্যাকসিন নিতে চাই।’

দেশের মধ্যে প্রথম ভ্যাকসিন নিতে চাওয়ার ক্ষেত্রে কী তাকে অনুপ্রাণিত করেছে, জানতে চাইলে ৩৮ বছর বয়সী এই নার্স বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন যাবৎ এ পেশায় আছি। যখন করোনা পরিস্থিতি গুরুতর ছিল, তখনো আমি আমার দায়িত্ব থেকে পিছপা হইনি। আমি যে হাসপাতালে কাজ করছি, সেটি কোভিড-১৯ এর জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতাল। মহামারির শুরু থেকেই আমি এখানে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তখন আমি আমার পেশা ছেড়ে চলে যাইনি। সুতরাং, যখন ভ্যাকসিন এলো, তখন পিছপা হব কেন? এখানে তো ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’

রুনু জানান, দেশে করোনা টিকাদান কর্মসূচি চালুর প্রথম দিনে তার আরও দুই সহকর্মীও ভ্যাকসিন নেবেন।

রুনুর এই সাহসী সিদ্ধান্তে তার পরিবারের সদস্যরাও সমর্থন করেছেন বলেও তিনি জানান।

‘আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। ভ্যাকসিন সম্পর্কে কেউই নেতিবাচক কিছু বলেনি। প্রত্যেক ভ্যাকসিনেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এই ভ্যাকসিনেরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। যদি আমার ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তাহলে সেটা আমার দুর্ভাগ্য হবে। কিন্তু, আমি এটা নিয়ে তেমন একটা চিন্তিত না’, বলছিলেন রুনু ভেরোনিকা কস্তা।

নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা শেষ করে ২০০২ সালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে যোগ দিয়েছিলেন রুনু। গাজীপুর থেকে আসা-যাওয়া করে দীর্ঘ নয় বছর তিনি সেখানে কাজ করেন। এরপর ২০১৩ সালে যোগ দেন সরকারি চাকরিতে।

রুনু বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল আমার প্রথম কর্মস্থল। আমি তখন থেকেই এখানে কাজ করছি।’

রুনু জানান, তার স্বামী পবন গোমস একটি বেসরকারি কোম্পানিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। ২০০৫ সালে তাদের বিয়ে হয়। এই দম্পতির এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তাদের ১৩ বছর বয়সী মেয়ে প্রথা গোমস ও ১০ বছর বয়সী ছেলে প্রয়াস গোমস স্কুলে পড়ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Iran's top security body to decide on Hormuz closure

JD Vance says US at war with Iran's nuclear programme, not Iran

15h ago