পটুয়াখালীতে দুটি মরা খাল পুনঃখনন, কৃষক পরিবারে আনন্দ

সবজির গ্রাম হিসেবে খ্যাত কলাপাড়া উপজেলার কুমিরমারা, মজিদপুর, সোনাতলা, এ তিন গ্রামের সবজিচাষিসহ স্থানীয় কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া দুইটি মরা খাল কুমরিমারা খাল ও মজিদপুর খাল পুনঃখননে এসব গ্রামের প্রায় এক হাজার কৃষক পরিবারে হাসি ফুটেছে। খননকৃত খালগুলোতে ইতোমধ্যেই মিষ্টি পানির প্রবাহ শুরু হয়েছে। এতে তাদের সেচ সংকট কেটে গেছে। সবজির পাশাপাশি এসব কৃষকরা আমন, বোরো ধানের আবাদও শুরু করেছেন। যেন দুইটি খাল তাদের জীবনধারায় বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) উদ্যোগে ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্মল হোল্ডার অ্যাগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্টের (এসএসিপি) আওতায় ওই তিনটি গ্রামে দুই কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। এতে তিন গ্রামের অন্তত তিন হাজার বিঘা জমিতে ১২ মাস কৃষি আবাদ করার সুযোগ হয়েছে। খননকৃত খাল থেকে কৃষি জমিতে সেচ দেওয়ার পানি সরবরাহের জন্য আট ইঞ্চি চওড়া এক কিলোমিটার করে দীর্ঘ এলাকায় ভূ-গর্ভস্ত সেচনালা তৈরি করা হয়েছে। এ সেচনালার মাধ্যমে কৃষকরা খেতে চাহিদামতো পানি সংগ্রহের সুযোগ পাবেন। কৃষকরা ইতোমধ্যে এ সেচনালা ব্যবহার করে বোরোর আবাদে নেমেছেন।
বিএডিসির প্রকৌশলী মো. সোলায়মান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, খাল খনন ছাড়াও বৃষ্টির পানি ধরে রেখে যাতে কৃষকরা বাড়িঘরে ব্যবহারের এবং সবজির খেতে পানি সরবরাহ করতে পারে, এজন্য দুই হাজার লিটার ধারণ-ক্ষমতার রিজার্ভ ট্যাংক স্থাপন করে দেওয়া হবে প্রতিটি কৃষক পরিবারে। আগামী এক বছরে প্রায় এক শ চাষিকে এমন সুবিধার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুমরিমারা গ্রামের কৃষক জাকির গাজী বলেন, ‘দুইটি মরা খাল খনন করায় আমরা তিন গ্রামের চাষিরা মৌসুম-ভিত্তিক সবজিসহ ধানের আবাদ করতে পারছি। কেটে গেছে সেচ সংকট। চলতি মৌসুমে প্রায় দুই শ কৃষক সেচের সুবিধা পেয়ে বোরোর আবাদে নেমেছে।’
একই এলাকার কৃষক সুলতান গাজী ও আবুল কালাম জানান, খাল দু’টি খনন করায় তারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। এখন তারা বছরব্যাপী বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ করতে পারবেন।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মরা খালে পানি না থাকায় ওই তিন গ্রামের কৃষকরা এতদিন সেচ সংকটে ভুগছিলেন। এখন তাদের সেচ সংকট কেটে যাওয়ায় তারা ধানসহ শাক-সবজির আবাদ করতে পারছেন।
‘বর্ষায় জলাবদ্ধতা থাকছে না, আর শুকনো মৌসুমে মিঠা পানির সেচ সংকট কেটে যাচ্ছে। আর সরকারের এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে কৃষকরা খাদ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে পারবেন’, বলেন তিনি।
Comments