সৌদি ও আমিরাতে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র

সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বাইডেন প্রশাসন।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে যে অস্ত্র চুক্তি করেছিলেন তা যাচাই করছে বাইডেন প্রশাসন। নতুন প্রশাসন সাধারণত এ ধরনের পর্যালোচনা করে থাকে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
গতকাল বুধবার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ব্লিংকেন জানান, এই পর্যালোচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা নিশ্চিত হওয়া যে, আমাদের কৌশলগত লক্ষ্য ও পররাষ্ট্র নীতি প্রসারিত হচ্ছে কি না।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়টিই এখন আমরা যাচাই করছি।’
বুধবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে প্রথম সৌদি-আমিরাতের কাছে মার্কিন সমরাস্ত্র বিক্রি স্থগিতের খবর দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই দেশের কাছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সমরাস্ত্র বিক্রির উদ্যোগ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। এর মধ্যে সৌদি আরবের কাছে প্রিসিশন গাইডেড মিউনিশন্স থেকে শুরু করে আমিরাতের কাছে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির মতো সিদ্ধান্তগুলোও আছে।
অভিষেকের এক সপ্তাহের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিলো বাইডেন প্রশাসন। নির্বাচনি প্রচারণায় সৌদি আরবের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক পর্যালোচনা বা পুনর্মূল্যায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। দায়িত্ব নেওয়ার পর ইতোমধ্যেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতি যাচাই বা পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে অনেকগুলো নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার শাসনামলে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। লক্ষ্য ছিল, ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়া ও ইরানের বিরুদ্ধের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ।
২০১৯ সালের মে মাসে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন ট্রাম্প। তখন কংগ্রেসের আপত্তি সত্ত্বেও তিনি সৌদি, আমিরাত ও জর্ডানের কাছে আটশ কোটি ডলার অস্ত্র বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
এদিকে, গত বছরের ডিসেম্বরে সৌদিতে ২৯ কোটি ডলারের ছোট অস্ত্র বিক্রির অনুমোদনও দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
গত বছরের নভেম্বরে ট্রাম্প প্রশাসন কংগ্রেসে জানায়, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে এফ-থার্টি ফাইভ ফাইটার জেট ও ড্রোনসহ বিভিন্ন উন্নত অস্ত্র বিক্রির জন্য দুই হাজার ৩০০ কোটি ডলারের চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে। আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হওয়ার পরপরই অস্ত্র বিক্রির এই ঘোষণা আসে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো সেই সময় এই অস্ত্র চুক্তির সমালোচনা করেছিল। মানবাধিকার কর্মীরা সেসময় বলেছিলেন, এ ধরনের চুক্তি আঞ্চলিক বিরোধকে উত্সাহিত করতে পারে। বিশেষত লিবিয়া এবং ইয়েমেনে, যেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
Comments