খেলা

‘আপনি তো মারি দিছেন, ওরা তো মারতি পারবি না’

বোলিং লাইন আপে ছিলেন নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। নেটে তাদের বলে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট করছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে মাঝে মধ্যেই দুই একটি বলে পরাস্ত হচ্ছেন না, তাও নয়। মিরাজের একটি বল লাগে মুশফিকের প্যাডে। আবেদন করে মিরাজ বললেন, আউট। অন্যদিকে মুশফিকের দাবী বল স্টাম্প মিস করবে। তাদের তর্কের মাঝে পাশে দাঁড়ানো ব্যাটিং কোচ জন লুইস দুইজনকে বললেন, 'কুল, কুল।'
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বোলিং লাইন আপে ছিলেন নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। নেটে তাদের বলে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট করছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে মাঝে মধ্যেই দুই একটি বলে পরাস্ত হচ্ছেন না, তাও নয়। মিরাজের একটি বল লাগে মুশফিকের প্যাডে। আবেদন করে মিরাজ বললেন, আউট। অন্যদিকে মুশফিকের দাবী বল স্টাম্প মিস করবে। তাদের তর্কের মাঝে পাশে দাঁড়ানো ব্যাটিং কোচ জন লুইস দুইজনকে বললেন, 'কুল, কুল।'

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে উইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে দ্বিতীয় দিনের অনুশীলনের মূল গল্প অবশ্য এটা নয়। মূল গল্প ছিল মিরাজের আত্মবিশ্বাস।

বাংলাদেশের মাঠে সবশেষ টেস্ট সিরিজের স্মৃতিটা সুখের নয় উইন্ডিজের। ২০১৮ সালে সেরা দল নিয়ে এসেও টাইগারদের সঙ্গে নাকানিচুবানি খেতে হয়েছিল দলটিকে। স্পিন স্বর্গে ক্যারিবিয়ানদের সংগ্রামের মূল কারিগরই ছিলেন মিরাজ। প্রথম টেস্টে অবশ্য লড়াই করেছিল সফরকারীরা। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে মিরাজের ঘূর্ণিজালে পড়ে ইনিংস ব্যবধানেই হারতে হয়েছিল তাদের। একাই সে টেস্টে ১২ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মিরাজ।

এবার তো দলের সেরা তারকাদের অনেকেই নেই ক্যারিবিয়ানদের। পুরনো সুখস্মৃতির সঙ্গে যোগ হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের আত্মবিশ্বাসও। ওয়ানডে সিরিজের সেরা বোলারই এ স্পিনার। ৩ ম্যাচে ১০.২৮ গড়ে ৭টি উইকেট পেয়েছেন। রান দেওয়াতেও কৃপণ ছিলেন বেশ। ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ২.৭০ করে। তার পুরস্কারটা হাতেনাতেই পেয়েছেন তিনি। আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের চার নম্বরে উঠে এসেছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাসটা তুঙ্গে তার।

আর তার আত্মবিশ্বাস যে আসলেই আকাশ ছোঁয়া তার নজির দেখে গেল সাগরিকায় নিজেদের অনুশীলনে। এদিন মুশফিক তার একটি বল সুইপ করে বললেন, 'এটা চার।'

মিরাজ মানতে নারাজ, 'ভাই এই দিকে ফিল্ডার থাকবে।'

মুশফিকের উত্তর, 'তোর ফিল্ডার তো স্কয়ার লেগ ও মিড উইকেটে। এইখানে তো ফাঁকা।'

মুশফিকের যুক্তিতে হেরেও যেন হারলেন না মিরাজ। বললেন, 'ভাই, আপনি তো মারি দিছেন, ওরা তো মারতি পারবি না।'

তবে এ দুই তারকার খুনসুটির শেষ এখানেই নয়, আরও বেশ কয়েকবারই মধুর তর্কে লিপ্ত হতে দেখা গেল তাকে। আরও একটি সুইপ থেকে মুশফিক যখন বললেন চার, তখন মানতে চাইছিলেন না মিরাজ। মুশফিক তখন কিছুটা রেগেই বললেন, 'এটা চার হয়নি, ১০ হয়েছে।'

তবে মোদ্দাকথা, এদিন বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মিরাজ। মুশফিকের আগে সেই বয়সভিত্তিক দলের সতীর্থ নাজমুল হোসেন শান্তকেই এদিন নাচিয়ে ছেড়েছেন। তার বলে ঠিকভাবে ব্যাটই করতে পারছিলেন না শান্ত। পরে মোহাম্মদ মিঠুনকেও তার স্পিন ভেল্কি দেখালেন। তাতে এটা স্পষ্ট, ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টেস্টেও ভালো কিছু করতে মুখিয়ে আছেন এ স্পিনার।

অন্যদিকে ভালো কিছুর করার জন্য মুখিয়ে আছেন মুশফিকও। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সব শেষ টেস্ট সিরিজটা ভালো যায়নি তার। এবার ভালো কিছু করতে চান। তাই এদিন অনুশীলনে বেশ ঘাম ঝরাতে দেখা গেল এ ব্যাটসম্যানকে।

প্রথমে পেস বোলারদের নেটে ব্যাট করলেন। ইবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদ ও একজন নেট বোলারের বল অবশ্য খুব একটা সাবলীলভাবে খেলতে দেখা যায়নি। অনেকবারই পরাস্ত হয়েছেন। এরমধ্যে টানা দুটি বলে হয়েছেন বোল্ড। নিজেকে ঝালিয়ে নিতে পরে গ্রানাইটের স্ল্যাভেও অনুশীলন করলেন। একজন নেট বোলার বল ছুঁড়ছেন, আর পুল ও হুক করার অনুশীলন করলেন মুশফিক। তাতেও ক্ষান্ত হননি।

প্রায় আধঘণ্টা এ অনুশীলনের পর এক নেট বোলারকে দিয়ে ফুলটাস বলেও পুল করার অনুশীলনে মাতলেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। যেমন স্বাভাবিকভাবে কাউকে করতে দেখা যায় না। আর তাই দেখে কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও তাকে বললেন, 'এখান থেকে তোমার প্রত্যাশা কি মুশফিক?'

মুশফিক অবশ্য সেদিকে নজর দেননি। নিজের মতো অনুশীলন চালিয়ে গেলেন। টেস্ট সিরিজে দারুণ কিছু চাই-ই তার।

Comments

The Daily Star  | English

I am a class one student in politics: Shakib

The number 1 all-rounder receives a grand welcome in Magura on his first visit since getting nomination from Awami League to contest in the upcoming national polls

1h ago