সৌরভের হৃদযন্ত্রে বসানো হলো আরও দুটি রিং
সৌরভ গাঙ্গুলির হৃদযন্ত্রে আরও দুটি স্টেন্ট বা রিং বসানো হয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) বর্তমান প্রধানের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাকে রাখা হয়েছে কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। মহারাজা খ্যাত তারকার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।
বৃহস্পতিবার অ্যাপোলো হাসপাতালে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সৌরভের এনজিওপ্লাস্টি করা হয় এবং পরে দুটি স্টেন্ট বসানো হয়। রক্তনালীর মধ্যে চর্বি জমে সরু হয়ে যাওয়া পথ প্রশস্ত করতে এনজিওপ্লাস্টি করা হয়। আর এনজিওপ্লাস্টির পর প্রশস্ততা ধরে রাখতে ওই স্থানে স্টেন্ট বা রিং পরানো হয়।
দুপুর তিনটায় শুরু হয়ে বিকাল পাঁচটার দিকে শেষ হয় গোটা প্রক্রিয়া। অস্ত্রোপচারের তত্ত্বাবধান করেন ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি ও মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক অশ্বিন মেহতা। সেসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সৌরভের চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তিন চিকিৎসক সরোজ মণ্ডল, আফতাব খান ও সপ্তর্ষী বসু।
গণমাধ্যমের কাছে দেবী শেঠি জানিয়েছেন, ‘সুষ্ঠুভাবে স্টেন্ট বসানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। স্থিতিশীল রয়েছেন সৌরভ।’
বিকালে সৌরভকে দেখতে হাসপাতালে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাক্ষাতের পর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বলেছেন, ‘সৌরভ ভালো আছে। ওর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
আগামীকাল শনিবারই সৌরভ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন আফতাব, ‘সৌরভ অনেকটাই সুস্থ। আজ (শুক্রবার) ফের রুটিন চেকআপ হবে। করা হবে ইসিজিও। সব ঠিক থাকলে আগামীকালই তিনি ছাড়া পেয়ে যাবেন।’
সবমিলিয়ে তিনটি রিং বসানোর কারণে আগামী এক বছর বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে বিসিসিআই সভাপতিকে। চাপমুক্ত থাকার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসে তাকে আনতে হবে পরিবর্তন। এছাড়া, রক্ত তরল রাখার ঔষধসহ আরও কিছু কড়া ডোজের ঔষধ সেবন করতে হবে তাকে।
এক দফা হাসপাতালে কাটিয়ে বাড়ি ফেরার পর শারীরিক পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল ৪৮ বছর বয়সী সৌরভের। কিন্তু হঠাৎ করেই অবস্থার অবনতি হয়। গত মঙ্গলবার রাতে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তীব্রতা বাড়তে থাকে। সঙ্গে যোগ হয় বুকে ব্যথা। তাই পরদিন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে।
এর আগে, গত ২ জানুয়ারি নিজ বাড়িতে শরীরচর্চা করার সময় আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন সৌরভ। তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি ভিত্তিতে তাকে কলকাতার উডল্যান্ডস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেসময় লক্ষণ দেখে ধারণা করা হয়েছিল, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
পরবর্তীতে সৌরভের তিনটি ধমনীতে ব্লকেজ ধরা পড়ে। এর মধ্যে ডান দিকের ধমনীতে ব্লকেজ ছিল প্রায় ৯০ শতাংশ। সেখানে বসানো হয় একটি স্টেন্ট। পাঁচ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান সৌরভ। এরপর থেকে নিজ বাড়িতে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি।
Comments