কমলাপুর স্টেশন ভাঙার অনুমোদন দিলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

বর্তমান কাঠামো ঠিক রেখে মাল্টিমোডাল হাব ও মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে স্থপতি এবং নগরবিদদের দাবির মধ্যেই কমলাপুর স্টেশনটি ভেঙে আরও উত্তরে নতুন করে নির্মাণে সম্মতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
কমলাপুর রেল স্টেশন। ছবি: রাশেদ সুমন

বর্তমান কাঠামো ঠিক রেখে মাল্টিমোডাল হাব ও মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে স্থপতি এবং নগরবিদদের দাবির মধ্যেই কমলাপুর স্টেশনটি ভেঙে আরও উত্তরে নতুন করে নির্মাণে সম্মতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এক সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘কমলাপুর স্টেশন বিল্ডিংয়ের আগে এমআরটি লাইন-৬ এর সিজর ক্রসিংয়ের স্থান সংকুলান করার জন্য এমআরটি-৬ (ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট) লাইনের প্ল্যানে স্টেশন বিল্ডিং উত্তর দিকে স্থানান্তর করা হবে এবং এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ডিএমটিসিএল (ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড) সম্মত হয়েছে।’

গত বছরের ডিসেম্বরে সভাটি অনুষ্ঠিত হয় এবং এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সভার সিদ্ধান্তগুলো প্রকাশ করা হয়।

কমলাপুর স্টেশনটি ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনা। এটি ১৯৬০ এর দশকের আধুনিক স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর মধ্যেও অন্যতম।

কমলাপুর স্টেশনটি স্থানান্তর করতে গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ একটি নতুন পরিকল্পনায় একমতে পৌঁছায়।

রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্টেশনটি বর্তমান অবস্থান থেকে ১৩০ মিটার উত্তরে সরিয়ে নিতে হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের এই বৈঠকের পর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমান স্টেশন ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে এবং এর উত্তরে অনুরূপ একটি স্টেশন তৈরি করা হবে।

তিনি আরও জানান, এটি যেহেতু একটি আইকনিক স্থাপনা, তাই এটি ভেঙে ফেলার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন

মোট্রোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মিত হবে বলে প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এটি সম্প্রসারণ করে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত নেওয়ার নতুন পরিকল্পনা করা হয়।

সম্প্রসারণের ব্যাপারে রেলওয়ের আপত্তি না থাকলেও নতুন ডিজাইনের বিষয়ে আপত্তি জানায় প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে তারা নতুন এই ডিজাইনে সম্মতি প্রদান করে।

গত ১৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে একটি ছিল কমলাপুর মাল্টিমোডাল হাব। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে তা পাঠানো হয়।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কমলাপুর স্টেশন বিল্ডিংয়ের আগে এমআরটি লাইন-৬ এর সিজর ক্রসিংয়ের স্থান সংকুলান করার জন্য এমআরটি লাইন-৬ এর প্ল্যানে স্টেশন বিল্ডিং উত্তর দিকে স্থানান্তর করা হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষ প্রকল্প এলাকার সামগ্রিক পরিস্থিতি যাচাই করার জন্য বিস্তারিত গবেষণা চালানোর জন্য পরামর্শদাতা নিয়োগ দেবে।

কমলাপুর স্টেশনটি ১৯৬৮ সালের ২৭ জুলাই উদ্বোধন করা হয়। বিস্তীর্ণ ধানখেত থেকে জায়গাটিকে রূপান্তর করা হয় এশিয়ার অন্যতম সুন্দর ও আধুনিক রেলওয়ে স্টেশনে।

সরকারিভাবে ঢাকা রেলস্টেশন হিসেবে পরিচিত কমলাপুর রেলস্টেশনটি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও বৃহত্তম রেলস্টেশন। এর স্থপতি ড্যানিয়েল ডানহ্যাম ও রবার্ট বুই।

আরও পড়ুন: ভাঙা হবে ঐতিহ্যের কমলাপুর রেলস্টেশন

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago