পালানো ৩ স্কুলছাত্রকে বাড়ি পৌঁছে দিলো পুলিশ

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

কাজ করে আয় করার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছেড়ে পালানো তিন স্কুলছাত্রকে অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে লালমনিরহাট শহরের ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড থেকে ওই শিশুদের খুঁজে পায় লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ।

ওই তিন স্কুলছাত্রের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদী দুর্গম চর খড়িবাড়ি এলাকায়। আজ বুধবার সকালে তাদেরকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম।

পুলিশ জানায়, তিন শিশুকে লালমনিরহাট শহরে ঘুরতে দেখে তাদের সন্দেহ হয়। পরে জিজ্ঞাসা করে তারা জানতে পারে যে, শিশুরা বাড়ি থেকে পালিয়েছে।

তিন স্কুলছাত্র হলো— তিস্তা নদীর দুর্গম চর খড়িবাড়ি এলাকার দিনমজুর বকুল ইসলামের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র স্বপন ইসলাম (১১), দিনমজুর আক্কাস আলীর ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শান্ত ইসলাম (১০) ও দিনমজুর আফাজ উদ্দিনের ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র বাবু ইসলাম (৯)।

তারা পুলিশকে জানায়, গতকাল সকালে তারা কয়েক কিলোমিটার চর পায়ে হেটে লালমনিরহাটের বাউড়া এলাকায় গিয়ে বিকেলে একটি বাসে চড়ে লালমনিরহাটে শহরে পৌঁছায় রাতে। সেখান গিয়ে তারা ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে ঢাকাগামী একটি বাসে উঠার জন্য অপেক্ষা করছিল। ঢাকায় গিয়ে কাজ করে আয় করার উদ্দেশ্যে তারা বাড়ি ছেড়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

স্বপন জানায়, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ। পড়াশোনা করতে পারেনি। দরিদ্র পরিবারে অভাব সর্বদাই লেগে আছে। ঢাকায় গিয়ে আয় করে চলবে এবং বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারবে, সেজন্য বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল।

শান্ত জানায়, করোনার আগে যখন স্কুল খোলা ছিল, তখন স্কুলে গিয়ে বিস্কুট পেত। করোনায় স্কুল বন্ধ হয়ে যায়, আর পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যায়। বই কোথায় রেখেছে, সেটাও তার জানা নেই। কাজ করে টাকা রোজগার করবে বলে সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল।

বাবু জানায়, বাড়িতে খুব কষ্ট। স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে থাকতে হচ্ছে, আর সেজন্য তার বাবা তাকে গালিগালাজ করে। তাই রাগ করে সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল ঢাকায় যাওয়ার জন্য।

স্বপন ইসলামের বাবা বকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শিশুরা এমনটি করবে, আমরা ভাবতেই পারিনি। স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। সেজন্য তারা মানসিকভাবে এলোমেলো হয়ে পড়েছে। পুলিশ শিশুদের উদ্ধার করে হেফাজতে না রাখলে আমাদেরকে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হতো।’

লালমনিরহাট সদর থানার ওসি শাহা আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শিশুদের প্রতি অভিভাবকরা যত্নশীল না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় চরাঞ্চলের শিশুরা পড়াশোনা-বিমুখ হয়ে পড়েছে। উদ্ধার হওয়া তিন স্কুলছাত্রকে অক্ষত অবস্থায় তাদের অভিভাবকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

5h ago