আইসিজেতে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় মিয়ানমারের আপত্তি

গণহত্যা অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তির রীতি লঙ্ঘন করে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ তুলে গাম্বিয়া কর্তৃক মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নভেম্বরে করা মামলায় আপত্তি জানিয়েছে মিয়ানমার।
রোহিঙ্গা
হত্যা-নির্যাতন থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রোহিঙ্গারা। রয়টার্স ফাইল ছবি

গণহত্যা অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তির রীতি লঙ্ঘন করে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ তুলে গাম্বিয়া কর্তৃক মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নভেম্বরে করা মামলায় আপত্তি জানিয়েছে মিয়ানমার।

সেনাবাহিনী কর্তৃক ক্ষমতা নেওয়ার এক সপ্তাহ আগে, অর্থাৎ গত ২০ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) এই আপত্তি জানায় মিয়ানমার। 

আইসিজে আগামী ২০ মে পর্যন্ত তারিখ নির্ধারণ করেছেন, যার মধ্যে মিয়ানমারের তোলা আপত্তির বিষয়ে গাম্বিয়া লিখিতভাবে তাদের পর্যবেক্ষণ আদালতে জমা দেবে। তবে, আপত্তিতে মিয়ানমার কী জানিয়েছে, আইসিজে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি। 

গত ২৮ জানুয়ারি দেওয়া বিবৃবিতে আইসিজে জানায়, আদালতের বিচারব্যবস্থা ও মামলার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে আপত্তি তুলেছে মিয়ানমার। প্রাথমিক এই আপত্তির সই করা কপি মামলার অপর পক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নিউইয়র্ক-ভিত্তিক গ্লোবাল জাস্টিস সেন্টার বলছে, গাম্বিয়ার করার মামলার বিষয়ে মিয়ানমার আপত্তি তোলায় রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়টি আরও পিছিয়ে যেতে পারে।

তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে বলেছে, ‘গাম্বিয়ার করা মামলা নিয়ে মিয়ানমার আপত্তি তোলায় তা নিয়ে এখন আদালতে শুনানি হবে। ফলে মিয়ানমার গণহত্যা রীতি লঙ্ঘন করেছে কি না, তা নিয়ে আইসিজের চূড়ান্ত শুনানি আরও অন্তত এক বছর পিছিয়ে যাবে।’ 

২০১৯ সালের নভেম্বরে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসির) সহায়তায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা দায়ের করে গাম্বিয়া। গাম্বিয়ার অভিযোগে বলা হয়, প্রায় সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার ওপর নৃশংস সামরিক অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো পুড়িয়ে দিয়ে, হাজারো রোহিঙ্গাকে হত্যা, আহত ও নারীদের ধর্ষণ করেছে মিয়ানমার।

২০১৭ সালের আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বরতার শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে সীমানা পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে বিভিন্ন সময় নির্যাতনের শিকার আরও চার থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল। 

অন্তারিও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সির (ওআইডিএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে প্রায় ২৪ হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। 

গত বছরের ২৩ জানুয়ারি আইসিজে গাম্বিয়ার করা এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন। রাখাইন রাজ্যের ছয় লাখ রোহিঙ্গা গণহত্যার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন উল্লেখ করে মিয়ানমারকে গণহত্যা রোধ করতে, প্রমাণাদি ধ্বংস করা বন্ধ করতে এবং এ বিষয়ে চার মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এরপর প্রতি ছয় মাস পর পর রিপোর্ট পেশ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমার এখন পর্যন্ত দুইটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। একটি গত মে’তে এবং অপরটি নভেম্বরে। আগামী মে’তে তাদের পরবর্তী রিপোর্ট জমা দেওয়া কথা রয়েছে। এর মধ্যেই তারা মামলার বিষয়ে আপত্তি জানাল।

Comments

The Daily Star  | English
Donald Lu to visit Dhaka

US delegation’s visit: Dhaka, Washington to have ‘multi-dimensional’ talk

US Assistant Secretary Donald Lu, who is now visiting New Delhi, will travel to Bangladesh as part of the delegation

17m ago