স্কুলে ধর্মীয় পোশাকের বাধ্যতামূলক নিয়ম তুলে নিল ইন্দোনেশিয়া
পাবলিক স্কুলগুলোকে ধর্মীয় পোশাক পরার বাধ্যতামূলক নিয়ম নিষিদ্ধ করেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। আজ শুক্রবার বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
একজন খ্রিস্টান শিক্ষার্থীকে স্কার্ফ পরতে জোর করার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। ১৬ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী যে স্কুলে যেতেন যেখানে নিয়ম ছিল সব শিক্ষার্থীকে স্কার্ফ পরতে হবে। এ ধরনের যে কোনো নিয়ম বাতিলে স্কুলগুলোকে ৩০ দিন সময় দিয়েছে সরকার।
বিবিসি জানায়, ইন্দোনেশিয়া একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে অন্যান্য ধর্মকে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু, দেশটিতে ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
গত বুধবার এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। যেসব স্কুল এটা মানবে না তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষা ও সংস্কৃতিমন্ত্রী নাদিম মাকারিম বলেছেন, ধর্মীয় পোশাক পরার সিদ্ধান্ত ‘একজন ব্যক্তির অধিকার... এটা স্কুলের সিদ্ধান্ত নয়’।
সম্প্রতি পাডাং-এর একটি বৃত্তিমূলক স্কুলে যাওয়া খ্রিস্টান পরিবারের এক শিক্ষার্থীকে ক্লাসে মাথায় স্কার্ফ পরতে বলা হয়। তবে ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে এবং তার বাবা-মাকে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার জন্য ডাকা হয়। তার বাবা-মা গোপনে এই সাক্ষাতের একটি ভিডিও ধারণ করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তা পোস্ট করেন। যা অনলাইনে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই স্কুলের এক কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেছেন, স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী অমুসলিমসহ সকল নারী শিক্ষার্থীকে মাথায় স্কার্ফ পরতে হবে।
ওই শিক্ষার্থীর বাবা ইলিয়ানু হিয়া বিবিসি নিউজ ইন্দোনেশিয়াকে বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিনই আমার মেয়েকে মাথার স্কার্ফ না পরার জন্য তলব করা হয় এবং তার উত্তর ছিল সে মুসলিম নয়। যদি আমি (জোর করে) আমার মেয়েকে মাথার স্কার্ফ পরতে বাধ্য করতাম, তাহলে আমি তার আইডেন্টি নিয়ে মিথ্যাচার করতাম। আমার ধর্মীয় অধিকার কোথায়? এটা একটা পাবলিক স্কুল।’
এ ঘটনার পরে ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল একটি সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে তার নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী পোশাক পরার অনুমতি দেওয়া হবে।
Comments