হুতিদের ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ বলবে না বাইডেন প্রশাসন
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ইয়েমেনের মানবিক সংকট বিবেচনায় নিয়ে হুতিদের ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে চিহ্নিত করতে অসম্মতি জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
আজ শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ তকমা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বিষয়টি আল জাজিরাকে নিশ্চিত করেছে।
এর এক দিন আগে ইয়েমেনে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানের পক্ষে সমর্থন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘পূর্ববর্তী প্রশাসনের শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্তের ফলে যে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে, জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো স্পষ্ট করেছে যে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটকে ত্বরান্বিত করবে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত এসেছে।’
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইয়েমেনের প্রায় আড়াই কোটি জনগণের মধ্যে ৮০ শতাংশেরই জরুরি ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। দেশটির এই পরিস্থিতিকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র একদিন আগে, অর্থাৎ গত ১৯ জানুয়ারি ইয়েমেনের হুতিদের ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এর ফলে হুতিদের সঙ্গে মার্কিন নাগরিক ও সংস্থাগুলোর আর্থিক লেনদেন পুরোপুরি নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
অবশ্য জাতিসংঘ, রেডক্রসের কার্যক্রম এবং কৃষি পণ্য, ওষুধ ও মেডিকেল সরঞ্জাম রপ্তানি এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেটি ইয়েমেনের সংকট কাটাতে যথেষ্ট নয় জানিয়ে ওই স্বীকৃতি পুরোপুরি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা।
ইয়েমেন যুদ্ধকে ব্যাপকভাবে সৌদি আরব ও ইরানের ছায়াযুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেন সহিংসতায় সব পক্ষই যুদ্ধ আইন লঙ্ঘন করছে এবং অনেক ক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধের মতো গুরুতর অপরাধও সংগঠিত হচ্ছে।
সংস্থাটির তথ্যমতে, সেখানে সৌদি জোট এবং হুতি বিদ্রোহীদের উভয়পক্ষই জনবহুল এলাকায় মর্টার, রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ সহিংসতায় ইয়েমেনের হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, কয়েক লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
Comments