মিয়ানমারে সেনাবিরোধী ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ

Myanmar-1.jpg
মিয়ানমারের জন্য প্রার্থনা, মোমবাতি জ্বালিয়ে নাগরিক প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে কয়েক হাজার মানুষ। আজ শনিবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও অং সান সু চিসহ অন্যান্যদের মুক্তির দাবিতে ইয়াঙ্গুনের সড়কগুলোতে জমায়েত হন তারা।

বার্তা-সংস্থা রয়টার্স জানায়, ‘সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে’ ব্যানারে ওই বিক্ষোভ মিছিলে ‘সামরিক একনায়ক ব্যর্থ হোক, গণতন্ত্রের জয় হোক’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) লাল রঙের পোশাক পরেছেন ও কেউ কেউ লাল পতাকাও হাতে নিয়েছেন।

শনিবারের মিছিলে নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী সু চিসহ অন্যান্য নেতাদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।

MYANMAR-6.jpg
হাঁড়ি বাজিয়ে প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স

গত সপ্তাহে সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী ক্ষোভ দিন দিন জোরালো হচ্ছে। পুরো সপ্তাহ জুড়েই মিয়ানমারে বিভিন্ন অঞ্চলে অভিনব কায়দায় সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন।

আজ শনিবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেইতেও মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে।

ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ

সেনা অভ্যুত্থানের পর সপ্তাহ জুড়ে প্রতি রাতেই ইয়াঙ্গুন ও অন্যান্য শহরের বাসিন্দারা বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাঁড়ি ও কলসি বাজিয়ে প্রতিবাদ জানান। প্রতি রাতেই মিয়ানমারের জন্য প্রার্থনা করে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়।

মিয়ানমারের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মীরা কর্মবিরতি ঘোষণার পর তিন আঙুল দিয়ে স্যালুটের মাধ্যমে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ইয়াঙ্গুনের কয়েকটি দোকানে আর্মি পোশাক পরিহিত কারও কাছে পণ্য বিক্রি না করার নোটিশ ঝুলিয়েছেন দোকান মালিকরা। এ ছাড়াও, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বাজারগুলোতে লাল বেলুন ঝোলানো হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সেনা অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, কলসি বাজিয়ে প্রতিবাদের জন্য প্রায় ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে।

সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিবাদ জোরালো হওয়ায় ফেসবুকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার ও ইনস্টাগ্রামও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জান্তা সরকার।

MYANMAR-3.jpg
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বাজারে লাল বেলুন ঝোলানো হয়েছে। ছবি: রয়টার্স

শনিবার নরওয়ের টেলিকম সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিনর জানায়, ইন্টারনেট সরবরাহকারীদের ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারে ভিপিএন ব্যবহার করে অনেকেই প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। সে কারণে কর্তৃপক্ষ ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) জালিয়াতি করে ক্ষমতায় এসেছে অভিযোগ করে সেনাবাহিনী। ১ ফেব্রুয়ারি সকালে নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী।

Myanmar-5.jpg
আর্মি পোশাক পরিহিত কারও কাছে পণ্য বিক্রি না করার নোটিশ ঝুলিয়েছেন দোকান মালিক। ছবি: মিয়ানমার টাইমস

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে ও এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

এদিকে, অং সান সু চিসহ অন্যান্যদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো নিন্দা জানিয়েছে।

অভ্যুত্থানের পর ৭৫ বছর বয়সী নেতা অং সান সু চিকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Iran Guards say hit Israel's spy agency in Tel Aviv

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west, while explosions near Tel Aviv, sirens blare across Israel; smoke rises after explosion in Iran’s Tabriz

7h ago