সারা দেশে টিকাদান শুরু
সারা দেশে এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। আজ রোববার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের জন্যে একটি আনন্দের দিন, যার অপেক্ষায় আমরা ছিলাম। এই ভ্যাকসিন খুবই নিরাপদ। এটি সবচেয়ে নিরাপদ ভ্যাকসিন। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নাই বললেই চলে। যতগুলো লোককে আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন। অ্যাপের মাধ্যমে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্যে নিবন্ধিত হচ্ছে।’
‘যদি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধিত হতে কষ্ট হয় তাহলে আমাদের আরও নির্দেশনা আছে মানুষ ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়ে সেখানকার তথ্য সেন্টারে গিয়ে নিবন্ধিত হতে পারেন এবং ভ্যাকসিন নিতে পারেন। কেউ তাও যদি না পারেন তাহলে তারা আসলে ফরম পূরণ করে ভ্যাকসিন নিবেন। অর্থাৎ, ভ্যাকসিন না নিয়ে কেউ ফেরত যাবেন না’— আমাদের এটিই লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে ৭০ লাখ ভ্যাকসিন আছে। আমরা ৩৫ লাখ মানুষকে দুই ডোজ করে দিতে সক্ষম হবো। আশা করি, আমাদের যেসব ভ্যাকসিন আসছে সামনে, সময় মতো আসবে, ভ্যকাসিন আসলে আমরা বহু লোককে দিতে পারবো। সারা বছরব্যাপী ভ্যাকসিনের এই কার্যক্রম চলবে। আমরা সকলের সহযোগিতা চাই। আমরা চাই এই ভ্যাকসিন মাধ্যমে মানুষ কোভিড-১৯ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাক নিরাপদে থাকুক।’
প্রায় ৪২ হাজার লোক টিকাদান কর্মসূচিতে কাজ করছেন উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যকাসিন নিয়ে আমরা কোনো সমালোচনা চাই না। ভ্যাকসিন মানুষের জীবন রক্ষার্থে, দেশবাসীর জীবন রক্ষার্থে আমরা এই ভ্যাকসিন দিচ্ছি। নিরাপদ ভ্যাকসিনটি যেন আমরা সুন্দরভাবে দিতে পারি সে জন্যে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আজকে আমরা নিজেরাও ভ্যাকসিন নেব। আমাদের সঙ্গে অনেক মন্ত্রী নেবেন, এমপি, সচিবসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ভ্যাকসিন নেবেন।’
টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে দেশের বিভিন্ন জেলার ৯৫৫টি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে মোট দুই হাজার ১৯৬টি দল কাজ করছে। গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত মোট তিন লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন ভ্যাকসিন নিতে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন।
ঢাকায় ৫০টি হাসপাতালে ৫০টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মোট ২০৪টি দল ঢাকার টিকাদান পরিচালনা করবে।
করোনার টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় ১৪ হাজার ৬৮৮ জন ভ্যাকসিনেটর এবং ২৯ হাজার ৩৭৬ জন ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে সরকার।
গত ২৫ জানুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ৫০ লাখ ডোজ পেয়েছে বাংলাদেশ। সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন কিনেছে সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে।
এ ছাড়া, ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে বাংলাদেশ।
ভারত থেকে আসা এই ভ্যাকসিন ছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্যাভির ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের নেতৃত্বে পরিচালিত কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ পাবে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন।
গত বুধবার কোভ্যাক্স একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সে অনুযায়ী, ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে প্রায় এক কোটি ২২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন
১০০৫ কেন্দ্রে টিকাদান শুরু কাল
Comments