অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ, সু চির মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারে বিক্ষোভ

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ ও এনএলডি নেতা অং সান সু চিসহ সেনাদের হাতে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারজুড়ে রাস্তায় নেমেছেন কয়েক হাজার মানুষ।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ ও অং সান সু চিসহ অন্য নেতাদের মুক্তির দাবিতে ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ। ৬ জানুয়ারি ২০২১। ছবি: রয়টার্স

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ ও এনএলডি নেতা অং সান সু চিসহ সেনাদের হাতে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারজুড়ে রাস্তায় নেমেছেন কয়েক হাজার মানুষ।

আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ ও অং সান সু চিসহ অন্যান্য নেতাদের মুক্তির দাবিতে ইয়াঙ্গুনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে।

‘সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে’ ব্যানারে হওয়া ওই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ‘সামরিক একনায়কতন্ত্র নিপাত যাক, গণতন্ত্রের জয় হোক’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যায় সু চিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এমন একটি গুজব ছড়িয়ে পড়লে নাগরিকরা রাস্তায় নেমে তা উদযাপন করতে শুরু করেন।

তারা জানান, সেনা-নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা মিয়াওয়াদ্দি নিউজ সংবাদটি প্রকাশ করেছে।

তবে সু চির আইনজীবী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। তিনি এখনো আটক আছেন।

গত সপ্তাহে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী ক্ষোভ দিন দিন জোরালো হচ্ছে।

গতকাল কয়েক হাজার মানুষ ইয়াঙ্গুনের সিটি হলে মিছিল করেছিলেন। গাড়ির হর্ন বাজিয়ে, তিন আঙুলের স্যালুটের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তারা।

সন্ধ্যা নাগাদ মিছিলটি শেষ হয়। রাতে ইয়াঙ্গুন ও অন্যান্য শহরের বাসিন্দারা বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাঁড়ি-কলসি বাজিয়ে প্রতিবাদ জানান। সেনা অভ্যুত্থানের পর সপ্তাহজুড়ে প্রতি রাতেই হাঁড়ি-কলসি বাজিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এমনকি, কয়েকটি জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন হওয়ার পরেও এটি হয়েছে।

মিয়ানমারের মান্দালে ও রাজধানী নাইপিদোতেও সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে বলেও সংবাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নাগরিকদের প্রতিবাদ রাষ্ট্র পরিচালিত গণমাধ্যমে আসেনি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এমআরটিভিতে নাগরিকরা সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করছেন এমন দৃশ্যই দিনব্যাপী দেখানো হয়েছে।

সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে মিয়ানমারজুড়ে প্রতিবাদের মুখে গতকাল শনিবার দেশটিতে ইন্টারনেট বন্ধ করেছে জান্তা সরকার।

নরওয়ের টেলিকম সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিনর জানিয়েছে, সমস্ত মোবাইল অপারেটরকে অস্থায়ীভাবে ডেটা নেটওয়ার্ক বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফোন কল ও এসএমএস পরিষেবা চালু আছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম বন্ধ ঘোষণার পর মিয়ানমারজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ বিছিন্ন করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর আগে দেশটিতে ফেসবুক বন্ধ করা হয়।

রয়টার্স জানিয়েছে, এ প্রসঙ্গে জানতে জান্তা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ দিকে, মিয়ানমারে ফেসবুকের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে জান্তা সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে ফেসবুক।

জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস এক টুইটে জানিয়েছে, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে ইন্টারনেট সংযোগ ও যোগাযোগ পরিষেবাগুলো অবশ্যই চালু করা উচিত।’

মিয়ানমারে সচেতন নাগরিক সমাজ ইন্টারনেট সরবরাহকারীদের জান্তার আদেশ না মানার আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলছে, ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ‘মূলত সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বকে বৈধতা দিচ্ছে।’

তবে টেলিনর জানিয়েছে, এ বিষয়ে তারা নিরুপায়।

আরও পড়ুন:

মিয়ানমারে সেনাবিরোধী ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ

মিয়ানমার: ১৯৪৮ থেকে ২০২১

অভ্যুত্থান মেনে না নেওয়ার আহ্বান সু চির

যে কারণে সু চিকে সরিয়ে ক্ষমতা নিলো সেনাবাহিনী

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দায় বিশ্ব সম্প্রদায়

‘নির্বাচনে কারচুপি’র অজুহাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান

মিয়ানমারে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র চায় বাংলাদেশ

ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে মিয়ানমারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ

ধীর গতির ইন্টারনেট, মিয়ানমারে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান, সু চি আটক

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago