দুদকের মামলায় কারাগারে দুই এলজিইডি প্রকৌশলী
রংপুরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় ছয় কোটি ৬৬ লাখ টাকার কাজে দুই শতাংশ হারে ঘুষ দাবি ও সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দেওয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় দুই প্রকৌশলীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার বেলা ৩টার দিকে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শাহেনূর এ আদেশ দেন।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন, এলজিইডি রংপুরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন এবং সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান কাওছার আলম।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, এলজিইডি, রংপুরের অধীনে চার কোটি ২৬ লাখ ও দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের দুটি কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়।
বিধি মোতাবেক ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এবং ওই বছরের ৪ মার্চ দরপত্র জমা দেন নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার মৃত আশরাফ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে ঠিকাদার রবিউল আলম বুলবুল।
দরপত্র দুটি গ্রহণ ও অনুমোদন করার পরেও নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (এনওএ) না দিয়ে রবিউল আলম বুলবুলের কাছে মোট কাজের (ছয় কোটি ৬৬ লাখ টাকা) ওপর দুই শতাংশ হারে ঘুষ দাবি করেন উল্লেখিত দুই প্রকৌশলী। এ অবস্থায় ঠিকাদার রবিউল আলম বুলবুল দুই শতাংশ টাকা না দেওয়ায় তাকে নিষ্ক্রিয় হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয় এবং সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও তাকে কাজ না দিয়ে অন্য একজনকে কাজ দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় রবিউল আলম বুলবুল বাদী হয়ে সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে (দুদক) এলজিইডি রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন এবং সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান কাওছার আলমকে আসামি করে ২০১৯ সালের ৭ মে মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
উল্লেখিত দুই আসামি উচ্চ আদালতে থেকে চার সপ্তাহের জামিন পান।
আজ জামিনের মেয়াদ শেষ হলে রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে তারা আবারও জামিনের আবেদন জানান। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) একেএম হারুন-উর রশীদ জানান, জালিয়াতির মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে অন্য একজনকে কাজ দেওয়ায় সরকারের ক্ষতি হয়েছে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই দুই প্রকৌশলীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত দুজনের মধ্যে আখতার হোসেন পরবর্তীতে বদলি হয়ে ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে যান এবং অপরজন রংপুরেই কর্মরত আছেন।
Comments