রূপপুর প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীর ওপর এমপি পুত্রের হামলার অভিযোগ, মামলা হয়নি ৩ দিনেও

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার ওপর সন্ত্রাসী হামলার তিন দিনেও মামলা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।
পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে দোলন বিশ্বাস। ছবি: সংগৃহীত

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার ওপর সন্ত্রাসী হামলার তিন দিনেও মামলা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।

পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে দোলন বিশ্বাসের লোকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

তবে পুলিশ বলছে, মামলায় সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ ও অভিযুক্তদের ব্যাপারে স্পষ্টতা না থাকায় এজাহার ত্রুটির কারণে মামলাটি আইনগতভাবে গ্রহণ করা যায়নি।

হামলায় গুরুতর আহত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্লিনিং কাজের সাথে যুক্ত সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাংলা পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল রানা বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সোহেল রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে দোলন বিশ্বাস ও তার সহযোগীদের সিন্ডিকেট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এলাকার নির্মাণকাজে ব্যবহৃত লৌহ সামগ্রী প্রকল্প থেকে অবৈধভাবে বের করার চেষ্টা করছিল।

এ সময় ট্রাক চালকদের কাছে বৈধ গেট পাস ও চালানপত্র না থাকায় তাদের প্রকল্প এলাকা থেকে বের হতে না দিয়ে আটকে দেয়া হয়।

প্রকল্প থেকে সামগ্রী বের করতে না পারায় ক্ষুব্ধ হয়ে দোলন বিশ্বাসের লোকজন গত ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে ১৫ থেকে ২০ জনের সশস্ত্র বাহিনী আমাদের বাংলা পাওয়ার সার্ভিসের অফিসে হামলা করে ও আমাকে মারধর করে।

সোহেল রানা আরও জানান, সন্ত্রাসীরা অফিসে ঢুকেই কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই ভাঙচুর চালায়। এসময় আমাকে লোহার রড দিয়ে পেটাতে শুরু করে।

এ ঘটনায় সোহেলের স্ত্রী মাধবি আক্তার বাদি হয়ে দোলন বিশ্বাসসহ ৫ জনের নাম দিয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি অভিযোগ করেন। তবে ঘটনার তিন দিনেও মামলা হিসেবে নথিভূক্ত হয়নি।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মালামাল চুরির ব্যাপারে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে প্রকল্প থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি।

হামলার ঘটনা ঘটলেও মামলায় সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ ও অভিযুক্তদের ব্যাপারে স্পষ্টতা না থাকায় এজাহার ত্রুটির কারনে মামলাটি আইনগতভাবে গ্রহণ করা যায়নি বলে জানান ওসি। সঠিকভাবে মামলা করা হলে গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে পুলিশের অসহযোগিতার কারণে, মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

সময়ক্ষেপণ করায় অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

হামলার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে, দোলন বিশ্বাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নেই, সম্প্রতি রূপপুর প্রকল্পে ঠিকাদারি কাজের সাথে যুক্ত হওয়ায় একটি মহল এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুসের কাছে জানতে চাইলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রকল্পের মালামাল চুরির কোন ঘটনা তাদের জানা নেই। বাংলা পাওয়ারে সংঘটিত বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রকল্প থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments