মাস্ক না পরায় মারধর: সমঝোতার পর কাজে ফিরলেন পায়রা সেতুর শ্রমিকরা

কর্মবিরতিতে থাকা বরিশালের পায়রা সেতু (লেবুখালী সেতু) নির্মাণ প্রকল্পের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। আজ শুক্রবার প্রকল্প পরিচালক আবদুল হালিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে সমঝোতা হওয়ার পরে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।’
মাস্ক না পরায় বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মো. জুবায়ের (৩০) নামে এক শ্রমিককে কয়েকজন চীনা নাগরিক মারধর করেন। এ ঘটনায় প্রকল্প এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চারটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
জুবায়ের বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পায়রা সেতু প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। আহত অবস্থায় তাকে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. সাদিয়া আফরোজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বুধবার রাত ৮টার দিকে জুবায়ের নামে এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার শরীরে মারধরের চিহ্ন রয়েছে। তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, তিনি এখন বাড়িতে আছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন বলেন, ‘বুধবার রাতেই ওই ঘটনা মীমাংসা করতে বৈঠক হয়। গতকাল সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুবায়ের নামে এক শ্রমিক মাস্ক না পরে কাজ করছিলেন। কয়েকজন চীনা শ্রমিক বিষয়টি দেখতে পেয়ে প্রকল্প ব্যবস্থাপক হোর কাছে অভিযোগ করেন। জুবায়ের জানতেন মাস্ক না পরলে শাস্তি দেওয়া হয়। মিস্টার হো ডাকলে শাস্তির ভয়ে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। হো চীনা শ্রমিকদের সহযোগিতায় তাকে ধরে ফেলেন এবং কয়েকজন মিলে মারধর করেন। আহত অবস্থায় জুবায়েরকে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।’
‘বিষয়টি জানাজানি হলে বাঙালি শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চারটি গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। দুই দফায় বৈঠকে সমঝোতা হওয়ায় কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আহত শ্রমিকের চিকিৎসা বাবদ পাঁচ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে’— বলেন আলাউদ্দিন মিলন।
Comments