চতুর্থ দফায় কক্সবাজার থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে ১,১৫২ রোহিঙ্গা

রোহিঙ্গা শিবির। রয়টার্স ফাইল ছবি

চতুর্থ দফায় স্থানান্তরের জন্যে ভাসানচরের উদ্দেশে কক্সবাজারের উখিয়া থেকে বাসে করে চট্টগ্রামে রওনা হয়েছেন রোহিঙ্গারা।

এক হাজার ১৫২ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুর একটি দলকে নিয়ে আজ রোববার দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার উদ্দেশে বাস ছেড়ে গিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের কড়া নিরাপত্তা দিয়ে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) শাহ রেজওয়ান হায়াত ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘আজ দেড় হাজারের মতো রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে যাচ্ছেন। এখন এক হাজার ১৫২ জনকে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

গতকাল বিকেলে ১৫টি বাসে প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গাকে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের কাছে শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে নিয়ে আসা হয়। পনেরটি বাসের সঙ্গে সাতটি মালবাহী ট্রাকও ছিল।

এ ছাড়া, আজ সকাল থেকে উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয় শিবির থেকে মিনিবাসে করে রোহিঙ্গাদের আনা হচ্ছে ট্রানজিট পয়েন্টে।

রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সরকারি কর্তৃপক্ষ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের মুখপাত্র অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামসুদ্দৌজা ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা একেবারে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে ক্যাম্প ইনচার্জদের কার্যালয়ে নিজেদের নাম লিখিয়েছেন শুধুমাত্র তাদেরকে ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে এসে সেখান থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

আজ ও আগামীকাল সোমবার দুই দিনে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে চতুর্থ দফায় ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় এক হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় তিন হাজার ৪৪৬ জন এবং গত  ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি দুই দিনে তৃতীয় দফায় তিন হাজার ২৪৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমানে ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৬ জন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে সাত লাখ ৪১ হাজার ৮৪১ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

এতিম রোহিঙ্গা শিশু রয়েছে ৩৯ হাজার ৮৪১ জন।

মূলত কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার ৩৪টি অস্থায়ী শিবিরে রোহিঙ্গারা বসবাস করছেন। প্রায় ১০ হাজার একর বন ও সমতল ভূমিতে তাদের জন্যে ৩৪টি আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে।

সেখানে ১৪২ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেষ্টনী তৈরি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যে ১১১ কিলোমিটার কাটাঁতারের বেষ্টনীর কাজ শেষ হয়েছে। এই কাঁটাতারের চারপাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে।

শিবিরগুলোতে নজরদারির জন্য বসানো হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্লোজসার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরা (সিসিটিভি ক্যামেরা)।

সেখানে ৪৯৫টি শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ইংরেজি ও মিয়ানমারের ভাষা শেখানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে ১৩৪টি।

আশ্রয় শিবিরের আইনশৃংখলা রক্ষায় আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিনটি ব্যাটালিয়ন স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও, স্থানীয় পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। গঠন করা হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম।

গত ১৯ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে একটি থানা উদ্বোধন করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

7h ago