মিরকাদিম পৌরসভা নির্বাচন

নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত গাড়িচালকের টাকা দেননি প্রিসাইডিং অফিসার

নির্বাচনী কাজের জন্য রিকুইজিশনের একটি পিকআপ গাড়ির চালককে প্রতিশ্রুত টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নির্বাচনী কাজের জন্য রিকুইজিশনের একটি পিকআপ গাড়ির চালককে প্রতিশ্রুত টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে।

নির্বাচনে পরিবহণের জন্য বরাদ্দ ছিল তিন হাজার ৫০০ টাকা। তবে চালককে এক হাজার ৫০০ টাকা দিতে চাইলে তিনি নিতে রাজি না হওয়ায় বাকি টাকা নিয়ে বাড়ি চলে যান প্রিসাইডিং অফিসার।

চালক অশোভন আচরণ করায় টাকা পরিশোধ করেননি বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার মো. সেলিম।

মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভা নির্বাচনে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জেলা নির্বাচন অফিসে এ ঘটনা ঘটে। রিকাবীবাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের তিন নম্বর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করছিলেন মো. সেলিম, আর নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত গাড়ির চালক ছিলেন মো. আল-আমিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা নির্বাচন অফিসের একজন কর্মকর্তা জানান, গাড়ি ভাড়া বাবদ সব প্রিসাইডিং অফিসারকে একই পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়। এখানে দূরত্ব বা অন্য কোনো বিষয় নেই। ভ্যাট কেটে সবাইকে তিন হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়।

গাড়িচালক আল-আমিন বলেন, ‘গত শনিবার সকাল থেকে নির্বাচনের কাজে আমার গাড়ি ব্যবহৃত হয়। ওই দিন দুপুরে আমি সরঞ্জামাদি নিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছাই। সেদিন প্রিসাইডিং অফিসার আমাকে ৫০০ টাকা দেন। পরে রোববার ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন অফিসে সরঞ্জামাদি পৌঁছানোর পর তিনি আমাকে এক হাজার টাকা দিতে চান। অথচ আমার ঠিক পাশের চার নম্বর ভোটকেন্দ্রের গাড়িচালক দুই হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছেন। কিন্তু প্রিসাইডিং অফিসার দুই হাজার ৫০০ টাকার বিপরীতে আমাকে এক হাজার ৫০০ টাকা দিতে চান। এই টাকা আমি নিতে রাজি হইনি। পরে তিনি টাকা না দিয়েই বাড়ি চলে যান।’

এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারকে তাৎক্ষণিক অবগত করলেও তিনি তা আমলে নেননি বলে জানান তিনি।

আল-আমিন আরও বলেন, ‘রিকুইজিশন গাড়ির কাগজে লেখা ছিল যে, নির্বাচনের কাজের জন্য আমাকে ভাতা দেওয়া হবে। অন্যান্য গাড়ির চালকরা দুই হাজার ২০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত পেয়েছেন। আমি প্রিসাইডিং অফিসারকে বলেছিলাম, নির্বাচন অফিস থেকে গাড়ি ভাড়া বাবদ যে টাকা দিয়েছে আমাকে সেটাই দেন। কিন্তু তিনি দেননি। রোববার রাত সাড়ে ৯টার পর তিনি মহাজনকে (গাড়ির মালিক) ফোন দিয়ে আমার নামে মানহানির মামলা করার হুমকি দেন। আমি কেমন আচরণ করেছি প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে থাকা একজন পুলিশ অফিসার তার সাক্ষী।’

অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার মো. সেলিম বলেন, ‘আমার সঙ্গে অশোভন ও বাজে আচরণ করেছে গাড়িচালক আল-আমিন। ভোটকেন্দ্র থেকে মালামাল নিয়ে নির্বাচন অফিসে যাওয়ার পথেই টাকা দেওয়ার জন্য নানাভাবে বিরক্ত করতে থাকে সে। নির্বাচনী সরঞ্জামাদি পৌঁছানোর পর টাকা দেওয়ার কথা বললেও সে মানছিল না। সে বেশি টাকা দাবি করেছিল। তাকে প্রথমদিন ৫০০ টাকা দেওয়া হয়, এরপর রোববার সন্ধ্যায় বাকি টাকা দিতে চাইলে সে বেশি টাকা দাবি করে।’

‘আশপাশের কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী প্রিসাইডিং অফিসাররা বলেছেন, তারা গাড়িভাড়া বাবদ দুই হাজার টাকা দিয়েছেন। এই চালকের সঙ্গে এ ঘটনা টাকার জন্য নয়, খারাপ আচরণের কারণে হয়েছে’, যোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার আরিফুল হক বলেন, ‘প্রিসাইডিং অফিসারকে খাত অনুযায়ী টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, তিনি সে অনুযায়ী ব্যয় করবেন। তিনি কোনো খাতে অনিয়ম করেছেন কি না, তা দেখার দায়িত্ব আর আমার নেই। এসব দেখতে গেলে আমার কাজ হবে না। চালক টাকা কম পেলে সে প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে বুঝবে, আমি এর কিছু জানি না।’

Comments

The Daily Star  | English

Don’t stop till the job is done

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday urged key organisers of the student-led mass uprising to continue their efforts to make students’ and the people’s dream of a new Bangladesh come true.

4h ago